UGBDP সাজেশান ফাইনাল পরীক্ষার বিষয় 2024

AE-GB - 11
2024
UGBDP সাজেশান ফাইনাল পরীক্ষার বিষয় 

প্রশ্নঃ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের যুগ বিভাজন কর?

উঃ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের দিকে তাকালে হাজার বছর বা তার কিছু অধিক সময়ের দিকে ফিরে যেতে হবে। বাংলা সাহিত্যের এক হাজার বছরের অধিক ইতিহাসকে মনে রাখার সুবিধার্থে বা কালের প্রবহাকে স্বীকার করে নিতে আলোচনার সুবিধার্থে কয়েকটি যুগে ভাগ করা যায়। যদিও সাহিত্যের ইতিহাসে ইতিহাস সর্বত্র সাল তারিখের হিসেব স্পষ্ট যুগ বিভাগ করা যায় না। সাহিত্যকর্মের বৈচিত্র্যে ও বৈশিষ্ট্যে নির্দিষ্ট যুগের সাহিত্যিক নিদর্পন ও সাহিত্যের বিবর্তনের ধারাটি বিশ্লেষণ করেই সাহিত্যির ইতিহাসে যুগ বিভাগ করা হয়ে থাকে। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকে প্রধানতঃ তিনটি যুগে ভাগ করা হয়েছে। যথা—(১) প্রাচীনযুগ (আনুমানিক ৭৫০ খ্রিঃ – ১২০০ খ্রিঃ), (২) মধ্যযুগ (১২০১ খ্রিঃ – ১৮০০ খ্রিঃ) ও (৩) আধুনিক যুগ (১৮০১ খ্রিঃ – বর্তমান সময় পর্যন্ত)।

প্রশ্ন ঃ “দেখ ভাই পতঙ্গের দল, ঘুরিয়া ফল নাই। পার, আগুনে পুড়িয়া মর। নানার চল, বোঁ করিয়া চলিয় যাই।”—উদ্ধৃতাংশটির উৎস উল্লেখ করো?

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘কমলাকান্তের দপ্তর' প্রবন্ধের ‘পতঙ্গ’ রচনা থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। রামায়ণ এবং মহাভারতে লেখক কোন দুটি বহ্নিকে ক্রিয়াশীল দেখেছেন ?

‘কমলাকন্তের দপ্তর' প্রবন্ধে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় শ্রী কমলাকান্ত চক্রবর্তীর জীবনীতে রামায়ণকে স্নেহ বহ্নিকে ও মহাভারতকে মান বহ্নিতে ক্রিয়াশীল বলে মনে করেছেন।

প্রশ্ন ঃ “সকলরেই এক একটি বহ্নি আছে—সকলেই সেই বহ্নিতে পুড়িয়া মরিতে চাহে সকলেই মনে করে, সেই বহ্নিতে পুড়িয়া মরিতে তাহার অধিকার আছে কেহ মরে কেহ কাচে বাধিয়া ফিরিয়া আসে” –উদ্ধৃতাংশটির উৎস নির্দেশ করো। 


উঃ আলোচ্য অংশটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘কমলাকান্তের দপ্তর' প্রবন্ধের ‘পতঙ্গ' প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে। বঙ্কিমচন্দ্র স্বয়ং কমলাকান্ত চক্রবর্তীর জবানীতে গভীর দার্শনিক অনুভবগুলি ব্যক্ত করেন।


প্রশ্নঃ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে কোন সময়কে শূন্যতার যুগ বলা হয় এবং কেন?

উঃ বাংলায় দ্বাদশ শতাব্দী থেকে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত তুর্কি আক্রমণের ফলে বাংলার সমাজে এক ঘোরতর বিপর্যয় নেমে আসে। এই সময় কোন সাহিত্য রচনার নিদর্শন মেলে না। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এই অধ্যায়কে শূন্যতার যুগ বলা হয় । 


প্রশ্ন : মধ্যযুগের ব্যপ্তি কত এই সময়কার সাহিত্যের সমৃদ্ধির বর্ণনা দাও।

উঃ খ্রিস্টীয় ১৩৫০ থেকে ১৮০০ শতাব্দী পর্যন্ত সময় হল মধ্যযুগ। এই যুগের সাহিত্য বৈচিত্র্যে বিশাল। চৈতন্য পূর্ববর্তী চৈতন্য সমসাময়িক ও চৈতন্য পরবর্তী মোট চার শতাব্দী ধরে লেখা মঙ্গলকাব্যগুলিকে এই অংশে সাজানা হয়েছে। বৈধ সাহিত্য, অনুবাদ সাহিত্য এবং অন্য শাখাগুলিও এই অংশে স্থান পেয়েছে।

প্রশ্নঃ চর্যাপদ বা চর্যাচর্য বিনিশ্চয় সম্পর্কে অতি সংক্ষেপে লেখ।

উঃ দ্বাদশ শতাব্দীর এই গ্রন্থটি চর্যাপদ প্রাচীন বাংলা সাহিত্যের একমাত্র নিদর্শন। খ্রিস্টীয় নেপালের রাজদরবার থেকে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় আবিষ্কার করেন। গীতিকবিতাধর্মী ৪৬টি পদ বিশিষ্ট গ্রন্থ এটি। ২৪ জন পদকর্তার নাম মিলেছে এই গ্রন্থে। সহজিয়া মতবাদ ও সাধনপদ্ধতি হল এই চর্যার মর্মবস্তু।


প্রশ্নঃ চর্যাপদের ভাষা সম্পর্কে অতি সংক্ষেপে লেখ।

চর্যাপদের ভাষা সাংকেতিক। তাই এই ভাষাকে সন্ধাভাষা বা আলো-আঁধারি ভাষা বলা হয়েছে। অনেকে এই ভাষাকে সন্ধ্যা বা সান্ধ্য ভাষা বলে স্বীকার করে নিয়েছেন।


প্রশ্ন : চর্যাপদে যে ধরনের মানুষের জীবনগাথা প্রকাশ পেয়েছে তার সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ ৷

চর্যাপদ নিম্নবর্ণের মানুষের যেমন-ডোমনারী, অরণ্যাচারী, শবর-শর্বরী, নৌ-নির্মাতা, গৃহনির্মাতা, কৃষিজীবী, শুন্ডিণী, শিকারী প্রভৃতি শ্রেণির মানুষের আচার-আচরণ, জীবিকানির্বাহ ও জীবনযাপনের পরিচয় পাওয়া যায়। অর্থাৎ বলা যায়, হাজার বছরের বাংলার সমাজজীবনের চিত্র ফুটে ওঠে চর্যার পদগুলিতে।


প্রশ্নঃ বাংলা সাহিত্যের বন্ধ্যাত্ব পর্ব বা বন্ধ্যাত্ব যুগ বলতে কী বোঝ?

তুর্কি আক্রমণের ফলে বাংলায় ত্রয়োদশ থেকে চতুর্দশ শতাব্দী অর্থাৎ থ্রি ১২০০-১৩৫০ খ্রিঃ। এর মধ্যে বাংলা সাহিত্যের কোন নিদর্শন পাওয়া যায় না। এইসময় বাঙালি জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। তাই এই অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে সাহিত্য শিল্প সৃষ্টি করা সম্ভব নয়। বাংলা সাহিত্যের এই দেড়শো বছর সময়কে তাই বন্ধ্যাত্ব পর্ব ও অন্ধকারময় শূন্যতার যুগ বলে অভিহিতি করা হয়েছে।

প্রশ্নঃ অনুবাদ সাহিত্য সম্পর্কে লেখ ।

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অনুবাদ সাহিত্যের ভূমিকা অপরিসীম। অনুবাদ সাহিত্য বাংলা সাহিত্যক বিশেষ সমৃদ্ধ করেছে। সংস্কৃত রামায়ণ, মহাভারত, ভাগবত প্রভৃতি ধর্মগ্রন্থগুলি বাংলায় অনুবাদ করেন, বিভিন্ন কবিরা। তাদের নামানুসারে এই ধর্মগ্রন্থগুলি বাঙালির ঘরের নিত্যপাঠ্য গ্রন্থে পরিণত হয়েছে। যেমন—কৃত্তিবাসী রামায়ম, কাশীরামদাসের ‘মহাভারত' প্রভৃতি ।

প্রশ্ন : কৃত্তিবাসী রামায়ণ সম্পর্কে লেখ ।

গৌড়শ্বরের প্রশংসা কৃত্তিবাসকে রামায়ণ অনুবাদে অনুপ্রেরণা যোগায়। ১৮০২-১৮০৩ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুর খ্রিস্টান মিশনারি উইলিয়াম কেরির উদ্যোগে গ্রন্থটি মুদ্রিত হয়। গ্রন্থটিতে বাঙালির গৃহধর্ম ও গার্হস্থ জীবনের কাহিনি চিত্রিত। বাল্মীকির রামায়ণের সীতা কৃত্তিবাসের হাতে পড়ে যেন বাঙালি কুলবধূ হয়ে উঠেছে।

প্রশ্নঃ কাশীরাম দাসের মহাভারত সম্পর্কে লেখ ।

আনুমানিক সপ্তদশ শতকের প্রথম ভাগ—অর্থাৎ ১৬০২ খ্রিঃ ১৬১০খ্রিঃ -এর মধ্যে কাশীরাম দাস মহাভারতের অনুবাদের কাজ সম্পন্ন করেন। সংস্কৃত মহাভারতের মতো অনুদিত গ্রন্থটিতে বিশাল কাহিনি, উচ্চতর জীবনাদর্শ এবং শ্রীকৃষ্ণের মহিমা সুন্দরভাবে বর্ণিত হয়েছে।

প্রশ্নঃ মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয় সম্পর্কে লেখ।

ভাগবত পুরাণের অনুবাদক হলেন মালাধর বসু তার অনূদিত গ্রন্থের নাম শ্রীকৃষ্ণ বিজয়। তিনি ভাগবতের দশম ও একাদশ স্কন্ধের সংক্ষিপ্ত অনুবাদ করেন। কবির কাব্য প্রতিষ্ঠায় খুশি হয়ে গৌড়েশ্বর তাঁকে ‘গুনরাজ খাঁ’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তাঁর শ্রীকৃষ্ণবিজয় রচনায় বাঙালি জীবন ও বাঙালির সংস্কৃতি সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।

প্রশ্নঃ শ্রীচৈতন্যদেব সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ ৷

চৈতন্যদেব ইংরিজি ১৪৮৬ খ্রিস্টাব্দে, অর্থাৎ ১৪০৭ শকাব্দে ফাল্গুন মাসে দোল পূর্ণিমার সন্ধ্যায় নবদ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম জগন্নাথ মিশ্র ও মাতার নাম শচীদেবী। চৈতন্যদেবের স্বল্প জীবৎকালের অর্ধেকটা কাটান নবদ্বীপে আর শেষ অর্ধেকটা জীবন কাটান নীলাচলে। ঈশ্বরপুরীর নিকট তিনি দীক্ষিত হন। দীক্ষিত হবার পর থেকেই তাঁর মনে প্রেমভক্তি সঞ্চারিত হয়। কেশভ ভারতীর নিকট সন্ন্যাসনেবার পর তাঁর ভক্তি ভাবাবেগ ক্রমশই বৃদ্ধি পেয়েছিল। তিনি ১৫৩৩ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। তবে মৃত্যুর আগে অর্থাৎ শেষ আঠারো বছর তাঁর দিব্যোন্মাদ অবস্থায় কাটে।

প্রশ্নঃ চন্ডীমঙ্গল কাব্য সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ।

আদি কবি মানিক দত্ত হলেও চন্ডীমঙ্গলের শ্রেষ্ঠ কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তী। দেবদেবীর মাহাত্ম্য প্রচারের আড়ালে এখানে মানুষের জয়গান গাওয়া হয়েছে, মধ্যযুগের কাব্য হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই এখানে দেবতা প্রাধান্য পেয়েছে। চন্ডীমঙ্গলের দেবী মহিষাসুরবিনাশিনী নন, তিনি অভয়া বনদেবী। কাব্যে দুটি খন্ড আছে। প্রথম খন্ডের দেবী অরণ্যের পশুমাতা আর দ্বিতীয় খন্ডের দেবী অরণ্যপালিকা। দুর্গত নারীকে অনুকম্পা অর্থাৎ ভয় দেখিয়ে তাকে দিয়ে নিজের পূজা করিয়ে, নিজের মহিলা তিনি নিজেই প্রচার করেছেন।


প্রশ্ন ঃ ধর্মমঙ্গল কাব্য সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ।

ধর্মমঙ্গলের আদি কবি ময়ূরভট্ট, বিশেষ উল্লেখযোগ্য কবিরা হলেন—খেলারাম চক্রবর্তী, ঘনরাম চক্রবচর্তী, রূপরাম চক্রবর্তী, রামদাস আদক এবং সীতারামদাস উল্লেখযোগ্য। ধর্মঠাকুরের মাহাত্ম্য অবলম্বন করে ধর্মমঙ্গল কাব্য রচিত। এই কাব্যটি কেবলমাত্র বাংলাদেশের রাঢ় অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ। একমাত্র ডোম সম্প্রদায়ের মানুষরা ধর্মপূজার পৌরহিত্যের অধিকার পেয়েছিলেন। কাব্যটিতে ঐতিহাসিক আভাস পাওয়া যায়। ধর্মপালের পুত্রের সাথে ইছাই ঘোষের যুদ্ধের বিবরণ পাওয়া যায় কাব্যটিতে।


প্রশ্নঃ আধুনিক বাংলা পদ্য সাহিত্য সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ ৷

উঃ খ্রিস্টীয় ১৮০০ সালে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ স্থাপিত হওয়ার পর থেকে বাংলা গদ্য সাহিত্যের সূচনা হয়। ঊনবিংশ শতক থেকে বাংলা সাহিত্যের আধুনিকযুগ শুরু। উইলিয়াম কেরীর উদ্যোগেই বাংলা ভাষা চর্চার মাধ্যমে বাংলা গদ্য রচনার সূত্রপাত ।


অধ্যক্ষ কেরীর ‘ইতিহাসমালা’ ও ‘কথোপকথন' এই পর্বের অনন্য সম্পদ। রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালংকার, অক্ষয়কুমা দত্ত, ভূদেব মুখোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখরা এই সময়ের গদ্যসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন।

প্রশ্নঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রতিভা আলোচনা করো ।

বাংলা চতুর্দশপদী কবিতা অর্থাৎ সনেটের প্রবর্তক হলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। তিনি মেঘনাদবধকাব্য রচনা করেন। মেঘনাদবধ কাব্যকে সাহিত্যিক মহাকাব্য বলা হয়। এছাড়াও ওঁর লেখা ব্রজঙ্গনা, বীরাঙ্গনা, তিলোত্তমাসম্ভবকাব্য প্রভৃতি কাব অনন্য। বীরাঙ্গনা একটি পত্রকাব্য। এখানে নারীমূর্তির কথাই প্রকাশিত হয়েছে।

প্রশ্নঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবি প্রতিভা সংক্ষেপে লেখ।

দীর্ঘ ৬৫ বছর বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন রবীন্দ্রনাথ। তিনি সাহিত্য জগতকে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর দ্বাদশবর্ষীয় বালকের রচনা কবি নামে প্রথম মুদ্রিত কবিতা ‘অভিলাষ’। স্বনামে মুদ্রিত প্রথম কবিতা—‘হিন্দুমেলার উপহার’,‘শেষের কবিতা’,‘তোমার সৃষ্টির পথ’। তাঁর কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ হল— ‘মানসী’,‘সোনার তরী’, ‘চিত্রা’, ‘কল্পনা’, ‘বলাকা’, ‘গীতাঞ্জলি’, ‘প্রান্তিক’, ‘নবজাতক’, ‘পুনশ্চ’ প্রভৃতি।

প্রশ্নঃ রবীন্দ্রনাথের সমসাময়িক কয়েকজন কবির নাম কর।

উঃ সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, করুণানিধন বন্দ্যোপাধ্যায়, অক্ষয়কুমার বড়াল, কাজী নজরুল ইসলাম, জসীমুদ্দিন, বুদ্ধদেব বসু, অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত প্রমুখ। এনারা রবীন্দ্রনাথের সমকালে কাব্যচর্চা করেছিলেন।

প্রশ্নঃ ভারততীর্থ কবিতা কোন কাব্যের কত সংখ্যক কবিতা ?

‘ভারততীর্থ’ কবিতাটি রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি কাব্যের ১০৬ সংখ্যক কবিতা ।

হেরো ও হৃদয় শব্দ দুটির প্রতিশব্দ লেখ।

হেরো ও হৃদয় শব্দ দুটির প্রতি শব্দ হল – দেখো ও হিয়া।

নীড় ও দ্বার শব্দ দুটির প্রতিশব্দ লিখ।

উঃ

-দেখো হিয়া 014

জপের মালা এবং মঙ্গলের ঘট শব্দ দুটিকে সমাসবদ্ধ কর।

জপমালা ও মঙ্গলঘট।

বাসা ও দরজা।

ত্বরা, রজনী শব্দ দুটি কোন্ কবিতায় ব্যবহৃত হয়েছে? শব্দ দুটির অর্থ লেখ।

ত্বরা, রজনী শব্দ দুটি ‘ভারততীর্থ’ কবিতায় ব্যবহৃত হয়েছে। শব্দদুটির অর্থ হল ত্বরা-দ্রুত, রজনী-রাত্রি।

কবিতায় বর্ণিত চারটি জাতির নাম লেখ।

দ্রাবিড়, শক, হূণ, পাঠান, মোগল ।

শূন্যস্থান পুরণ কর :

হেথায় নিত্য হেরো পবিত্র ধরিত্রীরে

এই ভারতের মহামানবের সাগর

‘...এক দেহে হল নীন'। –কাদের প্রসঙ্গে কবি একথা বলেছেন ?

আর্য, অনার্য, দ্রাবিড়, চন, শক, হূণ, পাঠান ও মোগল জাতির কথা বলেছেন।

কবি কাকে বন্দনা করেছেন ?

নরদেবতাকে

‘দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে, . বলতে কাদে সাথে মিলনের কথা বলেছে?

পশ্চিমী দেশগুলোর শিক্ষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে মিলনের মাধ্যমে ভারতবর্ষের পূর্ণতা আসবে বলে মনে করেছেন। সবার-পরশে-পবিত্র করা তীর্থ নীড়ে—এখানে তীর্থ নীড় বলতে কোন স্থানকে বলেছেন?

ভারতবর্ষকে বলেছেন।

প্রশ্ন : গেয়ে ও বয়ে শব্দ দুটির কাব্যিক রূপ লেখ।

উঃ গাহি ও পোহায়।

নীড়ে ও নীরে শব্দ দুটির প্রতিশব্দ লেখ। নীড়ে—বাসায়, নীরে-জলে।

রবীন্দ্রনাথের দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখ।

সোনার তরী, চিত্র, চৈতালী ইত্যাদি।

‘এই ভারতের মহামানবের সাগর তীরে'- পংক্তিটি কবিতায় কতবার ব্যবহৃত হয়েছে?

সাতবার ব্যবহৃত হয়েছে।

‘আবার আসিব ফিরে' কবিতাটি কত সালে কোন্ কাব্যগ্রন্থে ব্যবহৃত হয়েছে?

‘আবার আসিব ফিরে’ কবিতাটি ‘রূপসী বাংলা' কাব্যগ্রন্থে ১৯৫৭ সালে প্রকাশিত হয়েছে।

কুয়াশার বুকে ভেসে কোন গাছের ছায়ায় আসবেন এবং কোন মাসে ?

কুয়াশার বুকে ভেসে কার্তিক মাসে কবি কাঁঠালের ছায়ায় ফিরে আসবেন।

আবার আসিব ফিরে কবিতায় কয়টি নদীর উল্লেখ আছে?

ধানসিঁড়ি, জলঙ্গী, রূপসা ।

ধানসিঁড়ি নদী সম্পর্কে লেখ।

জলাঙ্গী নদী সম্পর্কে লেখ।

বাংলাদেশের বরিশাল জেলায় প্রবাহিত এর উৎস আড়িয়াল খাঁ নদ।

রূপসা সম্পর্কে লেখ।

বাংলাদেশের খুলনা জেলা দিয়ে প্রবাহিত নদী। এর উৎস ভৈরব।

পদ্মা নদী (ভারতবর্ষের) থেকে উৎপত্তি হয়েছে। নবদ্বীপের মায়াপুরের কাছে গঙ্গায় মিশেছে।

‘আবার আসিব ফিরে'- কবিতাটিতে কয়টি পংক্তি, এই কবিতা কোন শ্রেণির ?

১৪টি পংক্তি আছে। এই কবিতাটি সনেট বা চতুর্দশবদী কবিতা।

রবীন্দ্রনাথ জীবনানন্দের কবিতাকে কি বলেছেন?

রবীন্দ্রনাথ জীবনানন্দের কবিতাকে বলেছেন-‘চিত্ররূপময়'।

শূন্যস্থান পূরণ করো :

(ক) হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে (খ) কিশোরীর ঘুঙুর রহিবে লাল পায়।

প্রতিশব্দ লেখ ঃ ভেজা, নীড়ে।

ভেজা—সিক্ত, নীড়ে—বাসায়।

কবিতায় উল্লিখিত কাব্যরূপে পরিবর্তিত কর।

ছড়াইতেছে—ছড়াতেছে, সাঁতরিয়ে—সাঁতরায়ে।

কবিতায় ব্যবহৃত দেশজ শব্দ দুটি লেখ।

ছড়াতেছে, উড়িতেছে।

কবি গ্রামবাংলার কোন্ কোন্ পাখিদের প্রসঙ্গ এনেছেন ?

সন্ধ্যার বাতাসে কি উড়ে যাবে এবং লক্ষ্মীপেঁচা কোথায় ডাকবে?

সন্ধ্যার বাতাসে সুদর্শন উড়ে যাবে এবং লক্ষ্মীপেঁচা শিমুলের ডালে ডাকবে।

কবি গ্রাম বাংলার শঙ্খচিল, বক, শালিক ইত্যাদি পাখিদের প্রসঙ্গ এনেছেন।

কবিতায় কবির কোন ভাবা প্রকাশিত হয়েছে?

প্রথম আট-পঙ্কিতে নিজের আকাঙ্ক্ষার কথা ব্যক্ত হয়েছে এবং দ্বিতীয়টিতে প্রাকৃতিক দৃশ্যের মধ্যে নিজেকে উপলদ্ধির কথা বলেছেন।

প্রশ্নঃ সুদর্শন কোন সময় উড়েছে? সুদর্শন কি?

সন্ধ্যার বাতাসে। সুদর্শন এক পোকা বিশেষ।

শাদা ও ডিঙা শব্দের অর্থ কি?

শাদা, সাদা, ডিঙা-ছোটো নৌকা বিশেষ।

রাঙা ও ধবল শব্দের অর্থ লেখ।

রাঙা-লাল, ধবল-সাদা।

‘পতঙ্গ' রচনাটি কার রচনা? কোন মূল গ্রন্থের অন্তর্গত?

বঙ্কিমচচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রচনা। মূল গ্রন্থ কমলাকান্তর দপ্তর।

প্রশ্নঃ কমলাকান্ত কে? কোথায় বসে ছিলেন?

কমলাকান্ত আফিমখোর এক ব্যক্তি। নসীরামবাবুর বৈঠকখানায় বসেছিলেন।

তিনি কিভাবে পতঙ্গের ভাষা বুঝলেন?

আফিমের ঘোরে হঠাৎ তার প্রসাদস্বরূপ দিব্যকর্ণ প্রাপ্ত হয়ে।

‘সেকাল ভালো ছিল’– কে বলল? ভাল ছিল কেন?

পতঙ্গ বলল, পিতলের পিলসুজের উপর মেটে প্রদীপ থাকায় তাতে স্বচ্ছন্দে পুড়ে মরবার সুবিধা ছিল। হিন্দুর মেয়ের সাথে পতঙ্গের তফাৎ কোথায় ?

হিন্দুর মেয়েরা আশা-ভরসা থাকতে কখনও পুড়ে মরতে চায় না, কিন্তু পতঙ্গ সর্বদাই আত্ম বিসর্জনে প্রস্তুত।

পতঙ্গ মরতে চায় কেন?

শরীরের প্রতি তাদের মোহ নেই, একই ফুলের গন্ধ একই সূর্যের প্রতিভা, আসার এই বিশ্বজগতের বৈচিত্র্যহীনতায় তারা জীবনের আনন্দ হারিয়েছে।

প্রশ্নঃ রূপ আর পতঙ্গের পার্থক্য কি?

রূপ অন্যকে পোড়ায় আর পতঙ্গ নিজেকে পোড়ায়।

‘মনে হইল, একটা বহৎ পতঙ্গ ঠেসার দিয়া, তামাকু টানিতেছে কারকি মনে হল।

নসীরামবাবুকে আফিমগ্রস্ত কমলাকান্তের মনে হল একটি বৃহৎ পতঙ্গঠেসার দিয়া, তামাকু টানিতেছে।

লেখক কয় প্রকার বহ্নির কথা উল্লেখ করেছেন ?

জ্ঞানবহ্নি, ধনবহ্নি, মানবহ্নি, রূপবহ্নি, ধৰ্ম্মবহ্নি, ইন্দ্রিয়বহ্নি, সংসার বহ্নি।

‘জগতে অতুল্য কাব্যগ্রন্থর সৃষ্টি হইল’-কিভাবে তা সৃষ্টি হল ?

মহাভারকার মানবহ্নি সৃষ্টি করে দুর্যোধন পতঙ্গকে পোড়ালেন।

রামায়ণ সৃষ্টি হয়েছিল কেন ?

স্নেহবহ্নিতে সীতা-পতঙ্গের দাহ করার জন্য রামায়ণের

তোমাকে কি পাইব না? কতদিন কাচের ভিতর থাকিবে? কাকেকে এই কথা বলেছে?

সেজের ভিতর অবস্থিত অগ্নিকে বলেছে পতঙ্গ ।

স্ত্রী জাতির সঙ্গে পতঙ্গের পার্থক্য কোথায় ?

জ্ঞানবহ্নিতে।

পতঙ্গের মতে কাব্য কি?

হিন্দুমেয়েরা স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করতে চায় না, কিন্তু পতঙ্গ সবসময় আত্মবিসর্জন প্রস্তুত।

সক্রেটিস, গ্যালিলিও কিসে পুড়িয়া মরিল ?

রূপবহ্নি, ধনবহ্নি, মানবহ্নিতে নিত্য নিত্য সহস্র পতঙ্গ পুড়ে মরছে। এই বহ্নিদাহ যাতে বর্নিত হয় তাকে কাব্য বলে ? প্রশ্নঃ পিলসুজের উপর মাটির প্রদীপে পতঙ্গের কি সুবিধা হত ?

পতঙ্গেরা সহজেই পুড়ে মরতে পারত, কিন্তু সেজের ভিতর আলো থাকায় পতঙ্গ প্রবেশ করতে পারে না।

কমলাকান্তের দপ্তর কোন রচনার আদর্শে রচিত?

ডি. কুইন্স রচিত ‘Confession of an English Opium Eater' এর আদর্শে রচিত? ‘আমরা গরিব পতঙ্গ'–পতঙ্গ নিজেদের গরিব বলেছেন কেন ?

প্রকৃতির নিম্নতর জীব হল পতঙ্গ। দিব্যকর্ণপ্রাপ্ত হয়ে কমলাকান্ত তাদের ভাষা বুঝতে পেরে তার মানবত্ব আরোপ করেছে মাত্র। এরা আলো দেখলে পুড়ে মরতে চায়। কিন্তু এখন মরতে পারছে না আগুন সেজের ভিতর প্রতিষ্ঠিত বলে।

‘আমাদের চিরকাল হক'-কে বলেছে? কেন বলেছে?

পতঙ্গ একথা বলেছে। কারণ পতঙ্গ সেজের আবরণ থাকার জন্য পুড়ে মরতে পারছে না। অথচ পুড়ে মরা তাদের অধিকার বলে তারা দাবি করে।

শূন্যস্থান পূরণ করো :

ক) শঙ্খের মধ্যে যেমন সমুদ্রের শব্দ শুনা যায় তেমনি এই লাইব্রেরীর মধ্যে কি হৃদয়ের উত্থান-পতনের শব্দ শুনিতেছ? 

খ) কত নদী সমুদ্র পর্বত উল্লঙ্ঘন করিয়া মানবের কন্ঠ এখানে আসিয়া পৌঁছিয়াছে।

অতল স্পর্শে কালসমুদ্রের উপর কেবল এক-একখানি বই দিয়া সাঁকো বাঁধিয়া দিবে-কোন প্রসঙ্গে একথা বলা

মানুষ অতীতকে বর্তমানে বন্দি করে গ্রন্থের মাধ্যমে। অতীত ও বর্তমানের মেলবন্ধন প্রসঙ্গে উক্ত কথাটির অবতারণ করা

‘ইহারা সহসা বন্দি বিদ্রোহী হইয়া ওঠে...' কে বিদ্রোহী হয়ে উঠবে?

লাইব্রেরীর গ্রন্থগুলি ।

লাইব্রেরীর গ্রন্থগুলি বিদ্রোহী হলে কী হতে পারে ? 

প্রাবন্ধিকের মতে অক্ষরের শৃঙ্খল ভেঙে যেতে পারে এবং নিস্তব্ধতা ভেঙেও অক্ষরের বেড়া দগ্ধ করে একেবারে বের হয়ে আসে।

‘যেখান হইতে অনন্তকালের চিরজ্যোতির্ময়ী নক্ষত্রলিপি কি কেহ মুছিয়া ফেলিয়াছে'?– কেন রবীন্দ্রনাথ একথা

উঃ লাইব্রেরীর গ্রন্থরাজির মধ্যে বাঙালির রচনা তেমনভাবে সংযুক্তিকরণ ঘটেনি। দুই চারটি চটি চটি ইংরেজি খবরের কাগজে লেখালেখি ছাড়া বিশেষ কোনো রচনা তেমন নেই।

লাইব্রেরীর মধ্যে যে মানবহৃদয়ের বন্যা বাঁধা আছে তা কিসের সঙ্গে তুলনীয় ? হিমালয়ের মাথার উপরে কঠিন বরফের বদ্ধ বন্যার মত।

‘তাহাকে আপনার ভাষায় একবার আপনার কথাটি বলিয়ে দাও'—কোন প্রবন্ধে কি প্রসঙ্গে বলা হয়েছে? ‘লাইব্রেরী’ প্রবন্ধে বাঙালির গ্রন্থ রচনায় পিছিয়ে থাকা প্রসঙ্গে উক্ত কথাটি বলা হয়েছে।

‘আমাদের মাথার উপরে কি আনন্ত নীলাকাশ নেই’—কোন

‘লাইব্রেরী' প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন।

মাচার উপরকার লতি কুমড়া প্রসঙ্গে প্রন্ধকার কি বলতে চেয়েছিলেন ?

বিষয় আশায় সংক্রান্ত অতি সংকীর্ণ চিন্তাভাবনায় নিজেদের মজিয়ে রাখা প্রসঙ্গে বাঙালিদের প্রতি একথা বলেছেন। বাঙালি কন্ঠের সঙ্গে বিশ্বসংগীত কিভাবে মিলে যেতে পারে ?

বাঙালি কন্ঠ যখন সংকীর্ণ বিষয় আশায় ছেড়ে বৃহত্তর অনুভবের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গ্রন্থ রচনায় মনোনিবেশ করবে তখন।

বিশেষণে রূপান্তরিত কর ।

নীরব-নীরবতা, বিদ্রোহ-বিদ্রোহী।

‘এখানে ভাষা চুপ করিয়া আছে’– কোথায় ভাষা চুপ করিয়া আছে? কোন্ প্রসঙ্গে এমন কথা বলা হয়েছে? লাইব্রেরীর গ্রন্থ মধ্যে লাইব্রেরীর গ্রন্থসমূহের গুরুত্ব বোঝাতে লেখক এমন কথা বলেছেন শঙ্খের মধ্যে কি শোনা যায়? তার সঙ্গে লাইব্রেরীর তুলনা কোথায়?

শঙ্কের মধ্যে সমুদ্রের শব্দ শোনা যায়। লাইব্রেরীর সঙ্গে যে মানুষের হৃদয়ের উত্থান-পতনের শব্দ শোনা যায় ।

লেখক ভবিষ্যৎ -এ মঙ্গলের কোন চিহ্ন দেখেছেন ?

বিজাতীয় ও প্রাচীন স্বজাতীয় ভাব-সংঘর্ষে অল্পে অল্পে দীর্ঘ সুপ্ত জাতি বিনিদ্র হচ্ছে।

চিন্তাশীলতা লোপ পেলে কি হয় ?

তমোগুণের ও জড়ত্বের আগমন ঘটে।

‘নিয়মের পেষণে যে সৰ্ব্বনাশ উপস্থিত’–কে নিয়ম করে?

প্রাবন্ধিকের মতে প্রত্যেক ধর্মনেতা, সমাজনেতা সমাজের জন্য নিয়ম করতে ব্যস্ত।

ইংরেজ সাধারণের মনে কি ধারণা উপস্থিত হয়েছে?

ভারত সাম্রাজ্য তাঁদের অধিকারচ্যুত হলে ইংরেজ জাতির সর্বনাশ উপস্থিত হবে। তাই ভারতে ইংল্যান্ড অধিকার প্রবল রাখতে তারা উদ্যোগী।

ইংরেজরা কিভাবে আপন সিংহাসন ভারতে অটল রাখতে পারবে ?

তাদের বীর্য্য, অধ্যাবসায় ও স্বজাতির একান্ত সহানুভূতিতে একদিন ভারতবর্ষ জয় করেছিল। বিজ্ঞানের সহায়তায় বাণিজ্য বুদ্ধি বলে ভারতকে পণ্য উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম করেছে। এই ভাবকে বজায় রাখতে হবে।

ইংরেজের গুণ প্রজা কল্যাণে নিয়োজিত হল কাদের পক্ষে মঙ্গলপ্রদ ?

শাসক ও শাসিত উভয়ের পক্ষেই মঙ্গলপ্রদ।

অন্যের অনুকরণ দ্বারা পরের ভাব আপনার হয় না, অর্জন না করলে কোনো বস্তুই নিজের হয় না।

প্রাচীন ভারতের শিক্ষা কি?

রামকৃষ্ণদেব কি বলেছেন?

যতদিন বাঁচি, ততদিন শিখি।

‘হে ভারত, ইহাই প্রবল ‘বিভীষিকা’-বিভীষিকা কী ?

পাশ্চাত্যের অনুসরণ এমনই প্রবল হয়েছে যে ভালোমন্দের জ্ঞান, বুদ্ধি, বিচার শাস্ত্র সবই পাশ্চাত্যের দৃষ্টিতে দেখা হচ্ছে।

যা ওরা ভালো বলছে তাই ভারতীয়দের কাছে ভালো বলে মনে হচ্ছে।

‘এইমাত্র সম্বলে তুমি উচ্চাধিকর লাভ করিবে'? কি সম্বলের কতা বলা হয়েছে?

পরানুবাদ, পরাণুকরণ, পরামুখাপেক্ষী, দাসসুলভ দুর্বলতা, ইত্যাদি সাহায্যে উচ্চাধিকার লাভের চেষ্টা হাস্যকর। ভারতের নারী জাতির আদর্শ কী?

‘তোমার উপাস্য উমানাথ সর্বত্যাগী শঙ্কর'-কার উপাস্য? কেন ?

সীতা, সাবিত্রী, দময়ন্তী।

ভারতবাসীর উপাস্য, নিজের ব্যক্তি সুখি স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য নয়। ভারতমায়ের জন্য ভারতীয়রা বলিপ্রদত্ত।

ভারতবাসীর উদ্দেশ্যে স্বামীজী সপর্দে কি বলেছেন ?

আমি ভারতবাসী, চন্ডাল ভারতবাসী আমার ভাই। ভারতবাসী আমার প্রাণ, ভারতের দেবদেবী আমার ঈশ্বর, ভারতের সমাজ আমার শিশুশয্যা। আমার যৌবনের উপবন, বার্ধক্যের বারানসী।

ভারতবাসীর জন্য স্বামীজির কি প্রার্থনা?

হে গৌরীনাথ, হে জগদম্বে আমায় মনুষ্যত্ব দাও, মা আমার দুর্বলতা, কাপুরুষতা দূর কর, আমায় মানুষ কর। পাশ্চাত্যদেশে দুর্বলজাতি ইংল্যান্ডে জন্মালে তারা কি বলে নিজেদের পরিচয় দেয়?

নিজেদের স্বাজাতবোধ খুইয়ে কোম্পানির পোর্তুগিজ গ্রিক বলে পরিচয় না দিয়ে ইংরেজ বলে পরিচয় দেয়। বিবাহ সম্পর্কে প্রাচীন ভারত কি বলেছে?

বিবাহ ইন্দ্রিয়সুখের জন্য নয়। প্রজোৎপাদনের জন্য। যে, প্রণালীতে বিবাহ করলে সমাজের কল্যাণ সম্ভব তাই করা

উচিত। বহুজনের হিতের জন্য নিজের সুখভোগের ইচ্ছা ত্যাগ করতে হবে।

বিজিত ও বিজয়ীর মধ্যে কখন ব্যবধান সৃষ্টি হয় ?

স্বেচ্ছাসেবী সম্রাট যখন বিজিত জাতিকে শাসন করে।

দীর্ঘসুপ্ত ভারতীয় জাতির ধীরে ধীরে বিনিদ্র হবার কারণ কি?

বিজাতীয় পাশ্চাত্য ও প্রাচীন ভারতীয়দের ভাবের মধ্যে সংঘাত জাতিকে বিনিদ্র করছে।

কীভাবে আমাদের ব্যর্থ জীবনের সার্থকতা আসবে ?

ধ্যানের দ্বারা, কর্মজীবনের অভিজ্ঞতার দ্বারা সভ্য প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জীবনের স্বার্থকতা আসবে।

কীভাবে আনন্দের মূর্ত বিগ্রহরূপে মর্তে বিচরণ করব?

উঃ নিজের আনন্দে আমরা হাসব এবং সঙ্গে সঙ্গে জগৎকেও মাতিয়ে তুলব, এতে নিরানন্দের অন্ধকার লজ্জায় পলায়ন করবে। আমাদের প্রাণময় স্পর্শের প্রভাবেরোগ শোক, তাপ দূর হবে।

প্রশ্নঃ আমরা পৃথিবীতে কেন এসেছি?

সৃষ্টির কাজে আমরা এসেছি, তনু, মন-প্রাণ, বুদ্ধি ঢেলে আমরা সৃষ্টিকারী, নিজের মুখে যা কিছু সত্য যা সুন্দর যা কিছু শিব আছে তা আমরা সৃষ্ট পদার্থের দ্বারা ফুটিয়ে তুলব।

আমাদের আনন্দময়ী গতি কিভাবে চিরকাল অক্ষুন্ন থাকবে?

অনন্ত আশা, অসীম উৎসাহ, অপরিমেয় তেজ ও অদম্য সাহস নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব জীবনের সন্ধানে, অবিশ্বাস ও নৈরাশ্যের পর্বতকে প্রতিহত করে সমবেত শক্তির দ্বারা আনন্দের ধারাকে অব্যাহত রাখাই জীবনের লক্ষ্য।

প্রশ্নঃ কীভাবে দেশের মুক্তির ইহিাস রচিত হবে?

সংগ্রাম ও প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে দেশের মুক্তি আসবে? সমস্ত বন্ধন, গোঁড়ামি, কুসংস্কার ও সংকীর্ণতার প্রতি কুঠারাঘাত করে মুক্তি আনতে হবে।

যৌবনের কী কী ধর্ম সুভাষচন্দ্র লক্ষ্য করেছেন ?

যৌবন সবদেশের সৃষ্টিছাড়া ও লক্ষ্মীছাড়া, অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষার উন্মাদনায় যৌবনে মানুষ ছুটে চলে। ভুল করে, আছাড় খায় তবু উৎসাহ না হারিয়ে সামনে এগিয়ে চলার আনন্দে ছুটে চলে, অবিরাম গতিই যৌবনের অন্যতম ধর্ম।

তরুণের নবজাগরণের ফলে কী ঘটবে?

তরুণের নবজাগরণে তরুণের আত্মপ্রতিষ্ঠা ঘটবে। তরুণের প্রসুপ্ত আত্মজীবনের সকল ক্ষেত্রে রক্তিম রাগে জেগে উঠবে।। তরুণের আন্দোলনে জেগে উঠবে জাতি ।

জীবনের সর্বক্ষেত্রে স্বাধীনতা কাম্য কেন?

স্বাধীনতা ছাড়া, জীবনধারণ একটা বিড়ম্বমা, যে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যুগে যুগে আমরা, হাসতে হাসতে রকদান করেছি। জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে সকল দিকে আমরা যে মুক্তির বাণী প্রচার করি তার অন্যতম শর্ত স্বাধীনতা।

বঙ্কুবাবু কেমন লোক ছিলেন?

শান্ত গোবেচারা গোছের লোক। ছাত্ররা তাকে উত্যক্ত করলেও তিনি রাগতেন না, বন্ধুবান্ধবেরা তাকে অপদস্ত করে আনন্দ পেত। ঠাট্টাতামাসার পাত্র ছিলেন তিনি।

প্রশ্নঃ শ্রীপতি মজুমদারের আড্ডায় কারা আসতেন ?

চন্ডীবাবু, নিধুবাবু, ভৈরব চক্কোত্তি, পান্ডা, রামকানাই ।

শ্রীপতি মজুমদারের আড্ডা ছাড়তে পারেননি কেন ?

শ্রীপতি মজুমদার গাঁয়ের গণমান্য লোক ছিলেন তাকে এড়িয়ে যাওয়ার সাহস ছিল না কারও।

‘আজকের আড্ডার সুর ছিল উচ্চগ্রাসের’-কি ছিল বিষয় ?

সূর্য ডোবার কিছুক্ষণ পরেই আকাশে একটি চলন্ত আলো দেখা গিয়েছিল। মাস তিনেক আগেও এমন একটি আলো দেখা যায়। রাশিয়ান স্যাটেলাইট এই আলো। এই স্যাটেলাইট বিষয়ক গবেষণা ছিলআড্ডার বিষয়।

প্রশ্নঃ ‘ধরো যদি অ্য গ্রহ-ট্র থেকে কিছু পৃথিবীতে এল...' কে বলেছিলোবন ?

ভৈরব চক্কোত্তি।

বঙ্কুবাবুর মন কি বলতে লাগল ?

সম্ভব।অন্য গ্রহ থেকে লোকটোক আসা কিছু অসম্ভবের নয়, কাঁকুড়গাছিতে না আসা যেমন সম্ভব, আসতেও তো ঠিক তেমনই

‘ব্যাঁকা একেবারে আইডিয়াল’-কার প্রতি এই উক্তি ?

বঙ্কুবাবুর প্রতি নিধু মোক্তারের উক্তি।

চামচিকা।

বঙ্কুবাবুর আড্ডার সাথীদের চিড়িয়াখানার স্পেসিমেন হিসাবে কিভাবে বর্ণনা করেছেন ?

শ্রীপতিবাবুর উটের মতো থুতনি। ভৈরব চক্কোত্তির কচ্ছপের মতো চোখ, নিধু মোক্তার ছুঁচো, রামকানাই ছাগল, চন্ডীবাবু

বন্ধুবাবু কোথায় আলোটা দেখতে পেল? এপথে তিনি এলেন কেন ?

পঞ্চা ঘোষের বাঁশবাগানের মাঝ বরাবর। বঙ্কুবাবুর এই পথটি বাড়ি ফেরার সময় শটকাট হয় তাই।

বঙ্কুবাবু বনের মধ্যেখানে ডোবাটার চারপাশে কি দেখলেন?

ডোবার চারপাশে বেশ খানিকটা জায়গা জুড়ে আছে গাছের ডালে ও পাতায় একটা গোলাপি আভা তার নীচে। 

নতুন প্রাণীটির শরীর কেমন ?

লিকলিকে শরীরের মাথা বাদে সমস্তটাই একটা চকচকে পোশাকে ঢাকা। মুখের মধ্যে কান নাকের জায়গায় দুটো করে এবং ঠোঁটের জায়গায় একটা ফুটো। লোম বা চুলের লেশমাত্র নেই। হলদে চোখ দুটো এমনই উজ্জ্বল যে, দেখলে মনে হয় আলো জ্বলছে।

অ্যাং বন্ধুর হাতে কি দিয়েছিল ?

একটা নুড়ি পাথরের মতো ছোটো জিনিস। সেটা বঙ্কুবাবুর হাতে ঠেকতেই সর্বাঙ্গে শিহরণ খেলে গেল। বঙ্কুবাবু অ্যং-এর কাছে এগোতে পারেনি কেন ?

এটা অ্যাং-এর হাতে ছিল বলে এগোতে পারেনি। শত্রুকে জখম না করে অক্ষম করার মতো জিনিস ছিল ঐ নুড়ি পাথরের মতো ছোটো জিনিসটি।

বঙ্কুবাবু ছোটো কাচ-নলে কি দেখতে পেল ?

উঃ অন্তহীন বরফের মরুভূমি, আর মাঝে উঁচিয়ে আছে পাহাড়ের মতো বরফের চাঁই, অরোরা বোয়ালিস, ইগলু, পোলার বিষার, পেঙ্গুইনের দল, সিন্ধু ঘোটক ইত্যাদি ।

বঙ্কুবাবু ব্রাজিলের কি দেখতে পেল ?

গভীর জঙ্গল, দুর্ভেদ্য অন্ধকারে লতা পাতার ফাঁকে দিয়ে গলে আসারোদের ছিটেফোঁটা, অ্যানাকোন্ডা, কুমির ও কুমির খাওয়া পাঁচটি দাঁতালা রাক্ষুসে মাছ।

অ্যাং-এর কথায় বঙ্কুবাবু জীবনে উন্নতি করতে পারেনি কেন?

মানুষ হিসাবে বঙ্কুবাবু খারাপ নয়। কিন্তু তিনি অতিরিক্ত নিরীহ। অন্যায়ের প্রতিবাদ না করে অপমান সহ্য করা কোনো মানুষকেই শোভা পায় না ।

প্রশ্নঃ বঙ্কুবাবু শেষদিনের আড্ডায় কিভাবে প্রবেশ করলেন ?

বৈশাখীর ঝড় যেন একটি বেঁটেখাটো মানুষের বেশে প্রবেশ করে সবাইকে থামিয়ে দিল। এরপর পুরো এক মিনিট ধরে বঙ্কুবাবু হাসলেন।

প্রশ্নঃ পঞ্চা ঘোষের ডোবাটার কি পরিস্থিতি হয়েছিল ?

ডোবার চারপাশের দশটা বাঁশঝাড় রাতারাতি নেড়া হয়ে গিয়েছিল।

তিনি সারা পৃথিবীতে আর কারও সঙ্গে নয়, কেবল তাঁর সঙ্গে-কে ভাবছিল? কেন ?

বঙ্কুবাবু ভাবছিল। সৌরজগতের অজানা গ্রহ থেকে আসা এক লোক অ্যাং তার সঙ্গে আলাপ হয়ে গেল। সারা পৃথিবীতে আর কেউ নয় তাকেই মনোনীত করল অ্যাং। এতে কাঁকুড়াগাছির ছাপোষা স্কুলমস্টার অত্যন্ত গর্ববোধ করে পৃথিবীতে এক ও

অদ্বিতীয় ভেবেছে নিজেকে।

ভারততীর্থ

রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রকাশিত কবিতা হল-হিন্দু মেলার উপহার/ভারত তীর্থ /আফ্রিকা/বলাকা। রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পরে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ হল— শেষ লেখা/গীতাঞ্জলি/বলাকা/নৈবেদ্য। ‘ভারততীর্থ’কবিতাটির উৎস-রবীন্দ্রনাথের — গীতাঞ্জলি / গীতালি/ নৈবেদ্য/বলাকা কাব্যগ্রন্থ । ভারততীর্থ কবিতার চরণ- ৪২/৪৪/৪০/৪১।

বৈচিত্র্যের মধ্যে ভারতর্ষের মূল সুর হল-ঐক্য/অনেক্য/ প্রেম/বন্ধন।

ভারতবর্ষ হয়ে উঠেছে সব জাতির-মিলনক্ষেত্র/বিচরণক্ষেত্র/বিচরণ ক্ষেত্র/তীর্থক্ষেত্র। তীর্থ শব্দের অর্থ—পূর্ণভূমি/পুণ্যকর্ম/পুণ্যস্থানে / শূন্যস্থানে।

ভারতবর্ষে এসে সকলে উদ্বুদ্ধ হয়েছে—পিতৃত্ববোধে/মাতৃত্ববোধে/ভ্রাতৃত্ববোধে/সৌভ্রাতৃত্ববোধে। আজি খুলিয়াছ দ্বার। (শূন্যস্থন)-পূর্ব/পশ্চিম/উত্তর/দক্ষিণ।

ভারততীর্থ গীতাঞ্জলি কাব্যের কত সংখ্যক কবিতা? – ১০০ / ১০২/১০৫/১০৬।

ভারততীর্থ কবিতাটি—কোন ছন্দে লেখা ? - দলবৃত্ত/অক্ষরবৃত্ত /মাত্রবৃত্ত/গদ্যছন্দ।

ভারতীর্থ কবিতায় কবি দুবাহু বাড়িয়ে কাকে কল্পনা করেছেন-নর-দেবতাদের/ পিশাচ-দেবতাদের/দেবতাদের। এই কবিতা যে সমস্ত জনজাতির কথা বলা হয়েছে, তারা হল-আর্য, অনার্য, দ্রাবিড়, চীন, শক, হুন, পাঠান মোগল/সবজাতি/ (মোগল-পাঠান)আর্য-অনার্য

. বাজো বাজো (শুন্যস্থান)- পিনাকবীণা/সরস্বতী বীণা/প্রচন্ড বীণা/রুদ্র বীণা ।

হৃদয়তন্ত্রে কোন মন্দ্ৰ ধ্বনিত হয়েছিল—রুদ্রধ্বনি হুংকার ধ্বনি ঝংকার ধ্বনি/আনন্দ ধ্বনি।

কবি মনকে বলেছেন—একতায় গান শুনতে ও দুঃখ বহন করতে— সমবেত/বাউলগান/একতায়/মঙ্গল। সবার স্পর্শে পবিত্র এখনো ভরা হয়নি—জল/ঘট/পাত্র /মঙ্গলঘট

কবি জয় করতে বলেছেন- লাজ-লজ্জা/মৃত্যুভয়/ ধর্মভয় লজ্জা ও শরম কে।

কবিতায় রুদ্রবীণা কী?- শিবের বাদ্যযন্ত্র/বিষ্ণুর বাদ্যযন্ত্র / ব্রহ্মার বাদ্যযন্ত্র/ইন্দ্রের বাদ্যযন্ত্র –যা ধ্বংসের প্রতীক কবি মনে করেছেন।

কবিতার শেষে আশাবাদী কবি মনে করেছেন—ভারতবর্ষের মতো দেশে একদিন আসবে যেদিন কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। সকলের সৌভ্রাতৃত্ববোধের বন্ধন দৃঢ় হবে।

‘আজি ভারতের মহামানবের সাগরতীরে’-বাক্যটি কবিতায় ব্যবহৃত হয়েছে-৪/৫/৬/৭ বার (সাতটি)। কবিতায় স্তবক সংখ্যা-৪/৫/৬/৭টি (সাতটি)।

কবিতার পরিশেষে কবি আহ্বান জানিয়েছেন—আর্য, অনার্য, হিন্দু,মুসলমান, ইংরেজ, খ্রিস্টান, ব্রাহ্মণ, অব্রাহ্মণ (পতিত ) তথা সকলকেই কবি আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রতিশব্দ ঃ

অনল—আগুন

দ্বার-দরজা

রজনী-রাত্রি

আবার আসিব ফিরে :

-রক্ত

ভূধর-পথিবী।

শাল ত্বরা-দ্রুত

রূপসা নদীটির অবস্থান কোথায়?— বাংলাদেশের খুলনা জেলায়/বাংলাদেশের বরিশাল জেলায়/পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়/পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলায় ।

ধবল- সাদা,

ডাঙা—শুকনো জায়গা,

নীড়—বাসা।

জীবনানন্দের কবিতাকে ‘চিত্ররূপময়’ বলেছেন—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর/শশীভূষণ দাশগুপ্ত/ক্ষেত্রগুপ্ত/সুকুমার সেন।

শব্দার্থ ঃ

ইডিঙা – ছোট নৌকা,

এই কবিতার মূলভাব কী ?

কবি

। মৃত্যুরপর পুনরায় এই বাংলায় জন্ম নিতে চান। মানুষ হয়ে জন্ম না নিলেও মনুষ্যেতর প্রাণী যেমন, বক, কাকের বেশেই তিনি আবার এই বাংলার প্রকৃতিতে প্রত্যাবর্তন করতে চান।

সারাদিন কেটে যাবে – পালং / কলমী / লালচে /শুশুনি-র গন্ধ ভরা জলে।

পতঙ্গ প্রবন্ধ ঃ

প্রবন্ধ শব্দের অর্থ কী— প্রকৃষ্ঠ বন্ধন/অপ্রকৃষ্ট বন্ধন/বন্ধনহীন।

প্রবন্ধ (Eassay) শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন—চসার/অ্যারিস্টটল/মতেঁন/মিলটন।

বঙ্কিমচন্দ্রের ‘পতঙ্গ’ প্রবন্ধটির উৎস কী? – কমলাকান্তের দপ্তর/লোকরহস্য/নসীরামবাবুর দপ্তর ।

প্রবন্ধটি বঙ্কিমচন্দ্র যে ছদ্মনামে লেখেন—কমলাকান্ত চক্রবর্তী/কমলাকান্ত শর্মা/কমলাচরণ দাশ/কমলাকান্ত ভট্টাচার্য। কমলাকান্ত বসেছিলেন—রামবাবু/শ্যামবাবু/নসীবাবু/গগবাবু-র বৈঠকখানায়।

‘পতঙ্গ’ প্রবন্ধে ‘আমি’ বলতে বোঝানো হয়েছে-কমলাকান্তকে/বঙ্কিমচন্দ্রকে/নসীবাবুকে/পাঠককে। কমলাকান্তের জন্ম—১৭/১৮/১৯/২০ শতকে।

কমলাকান্তের নেশা ছিল—চা/মদ/আফিম/বইপড়া।

এতটি পতঙ্গ এসে ঘুরে বেরিয়েছিল—বেলুনের/আলোর / ফানুসের মনের - চারি পাশে।

আমি আলোর সঙ্গে কথা কহিতেছি—উক্তিটির বক্তা কে? -পতঙ্গ/কমলাকান্ত/নসীবাবু/পাঠক। নসীরামবাবুর বৈঠকখানায় জ্বলছে-ধুনো/ ধূপ/সেঁজবাতি/প্রদীপ।

পতঙ্গ জাতির চিরকালের হক বা অধিকার কী?- আগুনে পুড়ে মরা/জলে ডুবে মরা/বিষ খেয়ে মরা। পতঙ্গ জাতিকে কিসের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?—পুরুষ জাতির/উভলিঙ্গ জাতি/স্ত্রী জাতির সঙ্গে। নেশার ঘোরে কমলাকান্ত নসীরামবাবুকে কী মনে করেন ? ছোটো পতঙ্গ/বৃহৎ পতঙ্গ/মাঝারি পতঙ্গ। মনুষ্য মাত্রেই পতঙ্গ— বলতে প্রাবন্ধিক কী বুঝিয়েছেন?

মনুষ্যজাতিকে পতঙ্গের সঙ্গে তুলনা করেছেন। কারণ মানুষও বহ্নিতে আত্মহুতি দিতে চায়। বহ্নি কয় প্রকারের?

সাত প্রকারের । যথা—জ্ঞান বহ্নি, ধন বহ্নি, মান বহ্নি, ধর্ম বহ্নি, ইন্দ্রিয় বহ্নি ও সংসার বহ্নি।

. না থাকলে সংসার এতদিন পুড়িয়া যাইত - (শূন্যস্থান)- ধন/সহযোগিতা/বহ্নি/কাঁচ।

প্রাবন্ধিক সংসারে কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন-কাঁচ/পাথর/লোহা/তামা।

জ্ঞান-বহ্নির অনলে কে পুড়ে মরেন-সক্রেটিস-গ্যালিলিও/অ্যারিস্টটল-লুই পাস্তুর/রবীন্দ্রনাথ-বিদ্যাসাগর/ প্লেটো-রুশো। মান বহ্নির আলোকে পুড়ে মরেন মহাভারতের – যুদ্ধিষ্টির/দুঃশাসন/দুর্যোধন/কর্ণ।

ধর্মবহ্নির অদ্বিতীয় কবি— সেন্ট পল/সেন্ট বার্গ/সেন্ট পিটার/চসার।

জ্ঞান বহ্নিজাত দাহের গীত কী?— প্যারাডাইস লস্ট/ক্যান্টেবেরি চার্লস/কমেডি অফ ইরর। ভোগবহ্নি জাত দাহের রচনা কোনটি? –হ্যামলেট/প্যারাডাইস লস্ট/অ্যান্টনি, ক্লিওপেট্রা। পতঙ্গ প্রবন্ধটি কমলাকান্তের দপ্তর প্রবন্ধের -৪/৫/৬/৮ সংখ্যক প্রবন্ধ ।

রূপবহ্নির প্রকাশ ঘটেছে কোথায়—সাহাজাহান/রোমিও ও জুলিয়েট/ওথেলো নাটকে |

ঈর্ষা বহ্নির প্রকাশ ঘটেছে কোথায়—ওথেলো/ডাকঘর/সাহাজাহান/রোমিও ও জুলিয়েট।

ইন্দিয় বহ্নির প্রকাশ ঘটেছে— লোরচন্দ্রানী/মনসামঙ্গল/ধর্মমঙ্গল/গীতগোবিন্দ ও বিদ্যাসুন্দর কাব্যে। ‘পতঙ্গ’ প্রবন্ধটি কী শ্রেণির প্রবন্ধ ?

আত্মগৌরবী (Subjective)

বিশ্ব ধ্বংস সক্ষম বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

পতঙ্গ আসলে কমলাকান্তের মতো মানুষদের তথা আগুনকে বুঝিয়েছেন।

সকলেরই এক একটি

লাইব্রেরীঃ

. আছে—(শূন্যস্থান) –মন/সংসার/অর্থ/বহ্নি

লাইব্রেরী প্রবন্ধটির লেখক কে?- বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়/মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়/বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়/রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

লাইব্রেরী প্রবন্ধটির উৎস কী?-বিচিত্র প্রবন্ধ (১৯০৭)-প্রবন্ধ সংকলন।

লাইব্রেরীকে কিসের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে—সমুদ্রে তীরে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের/বেগবতী নদীর /নীরব মহাসমুদ্রের সঙ্গে।

লাইব্রেরীর মধ্যে শোনা যায়—কলকারখানার যন্ত্রপাতির শব্দ/মনুষ্য হৃদয়ের উত্থান-পতনের শব্দ/সমুদ্রের গর্জন। মহাপুরুষদের সহস্র ভাষায় সহস্র বছরের কাঠ কোথায় রক্ষিত আছে-চিড়িয়াখানায়/ড্রইয়িংরুমে/লাইব্রেরীতে।

লাইব্রেরী প্রবন্ধটি কি শ্রেণির –ব্যক্তিনিষ্ট/বস্তুনিষ্ঠ/আত্মগৌরবী।

অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত আমাদের কাছে আসছে-ব্যক্তিগত পত্র/মানবজাতির পত্র/প্রাতিষ্ঠানিক পত্র/গান এই প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ কত রকম গদ্য ব্যবহার করেছেন ?

চলিত গদ্য ও সাধু গদ্য।

প্রাবন্ধিক কী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন? -

রবীন্দ্রনাথের ক্ষোভ এই যে, বাঙালি সারা পৃথিবীর এই গচ্ছিত রাখা ভাবনার সঙ্গে নিজের ভাবনাকে যোগ করতে পারেনি। তাই লাইব্রেরীর বইয়ের পাতায় বদ্ধ জ্ঞান, আমাদের ব্যক্তিজীবনে প্রভাত খোলেনি।

প্রবন্ধের শেষে রবীন্দ্রনাথ –আশার গান শুনিয়েছে ও দেশহিত চিন্তার সঙ্গে মিশিয়ে ফেলার কথা বলেছেন।

লাইব্রেরীতে সঞ্চিত আছে—জ্ঞানের ভান্ডার/বইয়ের ভান্ডার/গল্পের বই/তথ্যের ভান্ডার।

ভারতবর্ষের সংস্কৃতি ঃ বর্তমান রায়ত

বর্তমান ভারত প্রবন্ধটির রচয়িতা কে?-রবীন্দ্রনাথ/বঙ্কিমচন্দ্র/বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ।

এই প্রবন্ধটির উৎস কী ?

শুদ্রজাগরণ, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সংঘর্ষ ও স্বদেশ খন্ড।

সমাজে শক্তির আধার-রাজা/মন্ত্রী/প্রজাপুঞ্জ/শিক্ষক।

স্বার্থত্যাগের প্রধান শিক্ষক-স্বার্থ/প্রেম/ভালোবাসা/ঘৃণা। সহানুভূতির কারণগুলি কী কী ?

সাধারণ বিপদ ও ঘৃণা এবং সাধারণ প্রীতি।

ভ্রান্ত স্বজাতি -বাৎসল্য - ও ইরান বিদ্বেষী জাতি হল- গ্রীক জাতি/আর্য/কুষাণ জাতি/শক জাতি। ভারতবাসীর সম্পূর্ণ স্বার্থসিদ্ধি পাল কিসে?

প্রজা উৎপাদন ও যেন-তেন-প্রকারেণ উদরপূর্তির র অবশয়ের মধ্য দিয়ে।

ভারত জীবনে উচ্চতম সোপান কী?—উচ্চবর্ণের মানুষের ওপর ধর্মীয় বাঁধা না থাকা।

সকল কার্যেই ভ্রম প্রমাদ আমাদের- একমাত্র/শিক্ষক/ছাত্র/পাঠক/বন্ধু ।

চিন্তাশীলতা লোপের সঙ্গে সঙ্গে মানুষর কী ঘটে?—তমোগুণের প্রাদুর্ভাব ও জড়ত্বের আগমন। নিয়মের পেষণে উপস্থিত হয়—সর্বনাশ/আনন্দ/বিরহ / পাপ।

খ্রিস্টধর্ম প্রচারক কেশরীর নাম-রোমক সম্রাট-সিজার/ব্যবিলন/হ্যাবিস বেল্ট।

ব্রাহ্মণেরা ‘মারাঠা’ জাতির স্তবস্তুতি আরম্ভ করেন-গুজরাট/মহারাষ্ট্র/বিহার/কেরালা। লেখক দেশের ভবিষ্যৎ মঙ্গলের চিহ্ন দেখতে পেরেছেন।

দেশের নেতৃ সম্প্রদায় কীভাবে দুর্বল হয়?

প্রজাদের থেকে নিজেদের বিচ্ছন্ন করে।

বিজিত ও বিজয়ীর মধ্যে কিভাবে ব্যবধান সৃষ্টি হয় ?

যখন প্রজা নিয়মিত রাজা ও প্রজাতন্ত্র বিজিত জাতিকে শাসন করে ? ভারতে ইংরেজ অধিকার রক্ষায় প্রধান উপায় কী?

ভারতবাসীর বুকে ইংরেজ জাতির গৌরব সর্বদা জাগিয়ে রাখা,

দীর্ঘ সুপ্ত ভারতীয় জাতির ধীরে ধীরে বিনিদ্র হবার কারণগুলির কী কী ?

বিজাতীয় পাশ্চাত্য ও প্রাচীন ভারতীয়দের ভাবের মধ্যে সংঘাত।

লেখকের মতে, ইংরেজদের সিংহাসন এদেশে অচল কেন?

যতদিন ইংরেজ জাতীয় জীবন থেকে তাদর জাতিগত বিশেষ গুণগুলি লোপনা পায় ততদিন।

আধুনিক ভারতীয়রা পতি-পত্নী নির্বাচনে-স্বাধীনতার / পরাধীনতার/জড়তার/বিরোধিতার - পক্ষপাতী। নব্যভারত কী বলছে?

পাশ্চাত্য জাতি যা করে তাই ভালো। সেটাই আমাদের গ্রহণযোগ্য।

যে ব্যক্তি বা সমাজের শেখবার কিছু নেই তা- মৃত/জড়/জীবিত/স্থবির।

লেখকের মতে ভারতের উদ্দেশ্যে-মুক্তি/আনন্দ/বাঁচা/লড়াই।

পাশ্চাত্য জাতির ন্যায় শক্তিশালী হতে হলে কী করতে হবে?-পাশ্চাত্য ভাব, ভাষা, আহার পরিচ্ছেদ গ্রহণ/বর্জন করতে হবে।

যতদিন বাঁচি, ততদিন শিখি কার বক্তব্য? -বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ/অরবিন্দ/সুভাষচন্দ্র পাশ্চাত্য অনুকরণে গঠিত সম্প্রদায় মাত্রই—এদেশে নিষ্ফল হবে, কেন?

কারণ—পাশ্চাত্য সমাজ ও ভারতীয় সমাজের মূল গতি ও উদ্দেশ্যের মধ্যে পার্থক্য বর্তমান। ভারতবাসীকে ইউরোপীয় বেশভূষা মন্ডিত দেখলে কী মনে হয়?

ওরা বুঝি দরিদ্র ও বিদ্যাহীন ভারতীয়দের সঙ্গে নিজেদের স্বজাতীয়ত্ব স্বীকারে লজ্জিত। আর্য সমাজের মূলে আছে-কঠোর-আত্ম বলিদান/অনুশাসন/শৃঙ্খলা/পরিশ্রম । প্রাচীন ভারতীয়রা কী মনে করে ?

তারা বিবাহের উদ্দেশ্য হল প্রজা উৎপাদন করা ।

অনুকরণ দ্বারা কী হয়?

পরের ভাব আপনার হয় না।

পাশ্চাত্য দেশে দোষের কাজ হল—মূর্তি পূজা/পশুবলি/ধর্মপূজা/হোমযজ্ঞ।

পাশ্চাত্যে সর্বদোষের আকর বলে মনে করা হয়—মূর্তিপূজা/বিধবাবিবাহ/বাল্যবিবাহ/সতীদাহ। ভারতের নারীজাতির আদর্শ স্থানীয় হলেন-সীতা-সাবিত্রী ও দময়ন্তী।

‘আমি ভারতবাসী চাল ভারতবাসী আমার ভাই'—একথা বলেছেন-রামকৃষ্ণ/অরবিন্দ/রবীন্দ্রনাথ/বিবেকানন্দ। প্রাবন্ধিকতায় অভিমত কী ?

তার মতে ভারতবাসী তাঁর ভাই, তাঁর প্রাণ, ভারতের সমাজ তার শিশুশয্যা, যৌবন উপবন আর বার্ধক্যের বারানসী। ভারতের মৃত্তিকা স্বর্গ। তাই কাপুরুষতা দূর করে মানুষ হবার আহ্বান জানিয়েছেন।

তরুণের স্বপ্ন ঃ

তরুণের স্বপ্ন প্রবন্ধের লেখক—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর/সত্যেন্দ্রনা দত্ত/কাজী নজরুল ইসলাম/সুভাষচন্দ্র বসু।

এই প্রবন্ধটি কোথায় প্রকাশিত হয় ১২ সালে মে- সবুজপত্র/দিগ্‌দর্শন/সমাচার দর্পণ/প্রবাসী পত্রিকায়।

রবীন্দ্রনাথ সুভাষচন্দ্রকে বলেছেন—দেশনায়ক/দেশনেতা/দেশপিতা/দেশপ্রেমিক।

প্রাবন্ধিক মনে করেন, আমরা পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছি.................... প্রচারের জন্য (শূন্যস্থান) ধর্ম/বাণী/আনন্দ/শিক্ষা। আমরা মর্ত্যলোকে নেমেছি-সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য -ধর্ম/বাণী/সত্য/শক্তি

জীবনকে সার্থক করে তোলার জন্য প্রয়োজন—ধ্যান ও কর্ম/ মোক্ষ লাভ / দানধ্যান / দয়াদাক্ষিণ্য।

আমাদের মধ্যে কী আছে?-আশা/উৎসাহ/ত্যাগ/বীর্য।

সৃষ্টির মধ্যেই কী আছে? -নিষ্ঠা/সংযম/উন্নতি/আনন্দ।

যৌবনের ধর্মগুলি কী কী আনন্দ দান, আত্মবলিদান, নূতনত্বের আহ্বান এই গুলি হল যৌবনকালের

ধর্ম-প্রচারক/পূজারী/উপাসক/শিক্ষক

জগতে যা নূতন, যা সরস, যা অনাস্বাদিত, তারাই উপাসক আমরা আমরা (অসীম/চলমান/জীবন/অনন্ত)।

পথের যাত্রী।

The Right to wake blunders -এর অর্থ হল –ভুল করা অনুচিত/ভুলই জীবনের মূল/ভুল করিবার

অধিকার/ভুলবশতঃ অনেক কিছু হয়।

আমাদের স্বভাবের প্রতি সকলের সহানুভূতি নাই, আমরা নির্মাণছাড়া/আনন্দছাড়া ও মন ছাড়া।

ব্লকের নিকট—সৃষ্টিছা

লক্ষ্মীছাড়া/সৃষ্টিছাড়া ও

আমরা দেশে দেশে কী রচনা করি—মুক্তির আনন্দ/মুক্তির ইতিহাস/বন্দির ইতিহাস/মুক্তির উপাসনা। আমাদের কাছে অখন্ড সত্য হল-মনুষ্যজীবন/সমগ্রজীবন/আনন্দলাভ/শক্তি সাধন।

......আকাঙ্ক্ষা আমাদের শিরায় শিরায় প্রবাহিত (শূন্যস্থান) আনন্দ/স্বাধীনতা/প্রণয়/মুক্তির। এই প্রবন্ধে যে সব দেশের নাম আছে, সেগুলি কী কী—ফিনিসিয়া, এসিরিয়া, ব্যাবিলোনিয়া, মিশর, গ্রীস, রোম, তুরস্ক, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, চীন জাপান ও হিন্দুস্থান (ভারত)।

শিশুকাল থেকে....

ভারত ইতিহাসে প্রেম অশ্রুর প্রস্তরীভূত নিদর্শন-কুতুবমিনার/রামমন্দির/তাজমহল/ইন্ডিয়াগেট।

নবজাগরণের মধ্যে সবচেয়ে বড় কথাটি কী? –তরুণের আত্ম প্রতিষ্ঠা লাভ/তরুণের চাকরি লাভ/তরুণের সম্মান লাভ । দেশের তরুণেরা কীভাবে শক্তি প্রদর্শন করেছে?

তরুণেরা বুদ্ধি ও বাহুবলের সাহায্যে কত সমাজ, কত সাম্রাজ্য ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে।

তরুণের নবজাগরনের ফলে কী হবে?—তরুণেরা নিজেদের শক্তি ও ধর্মকে চিনে আত্মপ্রতিষ্ঠার লড়াই চালিয়ে যেতে

পারবে।

আমরা শান্তির জল ছিটাইতে এখানে আসি নাই। (শূন্যস্থান)

যৌবনের

দ্বারদেশে উপনীত হইলে,

(বাহু-বুদ্ধি/শক্তি-দম্ভ/ক্ষমতা-আস্ফালন/পরিশ্রম-ভাগ্য)।

বাহু ও বুদ্ধি আমাদের সহায় হয়।

আমরা আনিয়া দিই পুরাতনের মধ্যে নূতনকে, জড়ের মধ্যে চঞ্চলকে।

বঙ্কুবাবুর বন্ধু গল্পটি কী রকম গল্প?

বঙ্কুবাবু বন্ধু

সত্যজিৎ রায়ের লেখা কল্পবিজ্ঞান মূলক গল্প ।

বঙ্কুবাবু স্কুলে পড়াতেন—বাংলা ও ভুগোল/বাংলা-ইতিহাস/অঙ্ক-বিজ্ঞান/ভূগোল-ইতিহাস। বঙ্কুবাবুর শিক্ষকতা জীবনের সময়কাল—২০/২১/২২/২৩ বছর।

বঙ্কুবাবুর জীবনে কী স্বপ্ন ছিল-নর্থ পোল/সাউথ পোল/ইস্ট পোল/ওয়েস্ট পোল দেখার। মানুষখেকো মাছের বাস ছিল-ব্রাজিলে/আর্জেন্টিনা/আফ্রিকা/এশিয়া ।

শনি-রবিবার বঙ্কুবাবু কোথায় আড্ডা দিতে যান–উকিল শ্রীপতি মজুমদারের/ নিধু মোক্তারের/ভৈরব চক্রবর্তীর/ পঞ্চা ঘোষের বাড়িতে।

গ্রামে মিত্তির বাড়ির কাছে ছিল— তেঁতুল গাছ/বটগাছ/পাকুড় গাছ/অশ্বত্থ গাছ।

বৈঠকী আড্ডার কী বিষয় ছিল? —উচ্চগ্রাম বা স্যাটেলাইট/পাহাড়-পর্বত/নদ-নদী/সমুদ্র নিয়ে আলোচনা।

গ্রহান্তরের প্রাণীটির নাম-অ্যাং/ব্যাং/চ্যাং/হ্যাং - তার দেশের নাম ক্রেনিয়াস।

গল্পে স্ট্যাটেলাইটের আলো প্রথম দেখেন—বঙ্কুবাবু/শ্রীপতি/চন্ডী/পঞ্চা।

শ্রীপতিবাবুর বাড়ির আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন—শ্রীপতি বাবু বঙ্কুবাবু, চন্ডীবাবু, রামকানাই, নিধু মোক্তার, ভৈরব চক্রবর্তী,অদ্ভুত পঞ্চা ঘোষ।

বঙ্কুবাবুর পুররা নাম-বন্ধুবিহারী দত্ত/বন্ধুবিহারী দাস/বন্ধুবিহারী মন্ডল।

প্রাণী অ্যাং -এর সঙ্গে বঙ্কুবাবুর দেখা হয়—মঙ্গলবার /বুধবার/শুক্রবার শনিবার।

অ্যাং-এর বয়স- ৮৩৩ বছর সে ভাষা জানে ১৪০০০/১৫০০০/১৬০০০/১৭০০০, সে ঘুরেছে ২৫/২২/২৪/২৬ টি  গ্রহ।

অ্যাং-এসে নেমেছিল—শ্রীপতিবাবুর/ইছাই ঘোষের/বঙ্কুবাবুর/পঞ্চা ঘোষের বাঁশ বাগানে।

বঙ্কুবাবুর আড্ডায় শেষ দিনটি ছিল—শনিবার/সোমবার/রবিবার/শনিবার ।


সাহিত্যের ইতিহাস

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের শ্রেণিবিভাগ কয় প্রকার—৩টি/৪টি/২টি/৫টি

প্রাচীন যুগ—৫০০ খ্রিঃ-৭০০ খ্রিঃ/৮০০-১২০০ খ্রিঃ / ৯০০ খ্রিঃ-১২০০ খ্রিঃ/১০০০খ্রিঃ-১৪০০ খ্রিঃ

মধ্যযুগ –১৪৫০খ্রিঃ-১৬০০ খ্রিঃ/১৬৫০খ্রিঃ-১৮০০ খ্রিঃ/১৩৫০ খ্রিঃ-১৮০০ খ্রিঃ / ১০০০-১৩০০ খ্রিঃ।

আধুনিক যুগ—১১০০ খ্রিঃ-১৫০০ খ্রিঃ/১৬০০ খ্রিঃ-১৭৫০ খ্রিঃ/১৮০০খ্রিঃ-২০০০ খ্রিঃ ১৮০০ খ্রিঃ-বর্তমান কাল

পর্যন্ত মধ্যযুগের যুগসন্ধির কবি- ভারতচন্দ্র রায়/রামপ্রসাদ সেন,

বাংলার নবজাগরণের যুগ— ষোড়শ শতাব্দী/সপ্তদশ শতাব্দী/অষ্টাশ শতাব্দী/উনবিংশ শতাব্দী।

প্রাচীন যুগের একমতার নিদর্শন- রামায়ণ/মহাভারত/চর্যাপদ/গাথাসপ্তশি।

চর্যাপদের আবিষ্কারক— বসন্তরঞ্জন বিদ্ববল্লভ/কাশীরাম দাস/মালাধর বসু/হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, নেপালের রাজদরবার থেকে আবিষ্কার করেন।

চর্যাপদের আসল নাম-চর্যাচর্যবিনিশ্চয়/চর্যাগাথা/চর্যাপদ/চর্যাগীত।

চর্যাপদের পদকর্তার সংখ্যা-২২/২৩/২৪/২৫, প্রাপ্ত পদ সংখ্যা-৪৬%,

চর্যাপদের মর্মবস্তু— সহজিয়া মতবাদ ও বৌদ্ধ সাধনতত্ত্ব/তৎকালীন সমাজের চিত্র/বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের জীবনযাত্রা। মধ্যযুগের অন্ধকারময় বা শূন্যতার যুগ বন্ধ্যাসময়-৯০০-১০৫০ খ্রিঃ/১০৫০-১১৫০ খ্রিঃ/১১৫০-১২৫০ খ্রিঃ/১২০০-১৩৫০ খ্রিঃ ।

কৃত্তিবাসী রামায়ণ প্রকাশিত হয়—উইলিয়াম কেরির উদ্যোগে শ্রীরামপর মিশন থেকে – ১৮০২-১৮০৩খ্রিঃ/১৮০৩-১৮০৪ খ্রিঃ/১৮০৪-১৮০৫ খ্রিঃ/১৮০১-১৮০২ খ্রিঃ।

বাংলার মহাভারতের প্রধান অনুবাদক—কৃত্তিবাস ওঝা/কাশীরাম দাস/মালাধর বসু/বড়ু চন্ডীদাস।

বাংলা রামায়ণের প্রধান অনুবাদক-মালাধর বসু/বৃন্দাবন দাস/কৃত্তিবাস ওঝা/গোবিন্দদাস। মালাধর বসুকে গুনরাজ হুঁ উপাধি দেন— গৌড়েশ্বর/বল্লাল সেন/লক্ষ্মণ সেন।

মালাধর বসু অনুদিত কাব্যের নাম—চৈতন্যমঙ্গল/চৈতন্যচরিতামৃত/শ্রীকৃষ্ণবিজয়/রামায়ণ।

চৈতন্যদেবের সময়কাল–১৪৮৬ খ্রিঃ-১৫৩৩ খ্রিঃ/১৪৮৫খ্রিঃ -১৫৩৪ খ্রিঃ/১৪৮৪খ্রিঃ-১৫৩৩ খ্রিঃ/১৪৮২খ্রিঃ-১৫৩২ খ্রিঃ।

চৈতন্যপূর্ব যুগের বৈষ্ণব কবি/পদকর্তা-বৃন্দাবন দাস/মালাধর বসু/গোবিন্দদাস/বড়ুচণ্ডীদাস, বিদ্যাপতি ও দ্বিজ চন্ডীদাস/কৃত্তিবাস ওঝা/কাশীরাম দাস, ঘনরাম চক্রবর্তী।

চৈতন্য সমকালীন বৈষ্ণব কবি-গোবিন্দ ঘোষ, বলরাম দাস,জ্ঞান দাস/মালাধ বসু, গোবিন্দাদাস, কৃত্তিবাস ওঝা/সৈয়দ আলাওল, ভারতচন্দ্র, রামপ্রসাদ সেন।

চৈতন্য পরবর্তী বৈষ্ণব কবি-গোবিন্দ দাস, বলরাম দাস, জ্ঞান দাস/ গোবিন্দ দাস, ঘনরাম দাস, যাদবেন্দ্ৰ/কৃত্তিবাস ওঝা, কাশীরাম দাস, বড়ু চন্ডীদাস।

রূপ গোস্বামীর লেখা কাব্য—উজ্জ্বল নীলমনি, ভক্তিরসামৃত সিন্ধু/গীত গোবিন্দ/মহাভারত/শ্রীকৃষ্ণকীর্তন। সংস্কৃতে লেখা প্রথম জীবনী কাব্য—চৈতন্য ভাগবত/ভাগবত/রামায়ণ/শ্রী শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্যচরিতামৃত বা মুরারি গুপ্তের কড়চা।

বৃন্দাবন দাসের চৈতন্য জীবনীকাব্যের নাম—চৈতন্যমঙ্গল/চৈতন্যচরিতামৃত/চৈতন্যভাগবত/চৈতন্য কড়চা। জয়ানন্দ ও লোচনদাসের জীবনীকাব্যের নাম-চৈতন্যচরিতামৃত/চৈতন্যমঙ্গল/চৈতন্যভাগবত/কড়চা। কৃষ্ণদাস কবিরাজের জীবনীকাব্যের নাম-চৈতন্যভাগবত/কড়চা/চৈতন্যমঙ্গল/চৈতন্যচরিতামৃত

গৌরচন্দ্রিকা শব্দের অর্থ—ভূমিকা/ উপসংহার/মূল বিষয়বস্তু-রাধাভাবে ভাবিত চৈতন্যদেবের কৃষ্ণ আরাধনা বিষয়ক বৈষ্ণব পদগুলিকে গৌরচন্দ্রিকা বলে। 

মঙ্গলকাব্যের তিনটি ধারা-মনসামঙ্গল, চন্ডীমঙ্গল ও ধর্মমঙ্গল।

মনসায় গীত প্রথম রচনা করেন-কানা হরিদত্ত/বিজয় গুপ্ত/চন্দ্রাবতী/মুরারী গুপ্ত। ধর্মমঙ্গলের আদি কবি—ঘনরাম চক্রবর্তী/রূপরাম চক্রবর্তী/ময়ূর ভট্ট/বিজয় গুপ্ত।

চন্ডীমঙ্গলের আদি কবি- মানিক দত্ত/কানাহরি দত্ত/ময়ূর ভট্ট/কাশীরাম দাস। শ্রেষ্ঠ কবি

মুকুন্দরাম চক্রবর্তী।

আরাকান রাজসভার কবি—দৌলত কাজী ও সৈয়দ আলাওল/মুরারী গুপ্ত/ভারচতন্দ্র রায়/রামপ্রসাদ সেন। ভারতচন্দ্র রচিত কাব্যের নাম—অন্নদামঙ্গল/মনসামঙ্গল/চন্ডীমঙ্গল/মহাভারত। কবিওয়ালা—রাম বসু, ভোলা ময়রা, হরু ঠাকুর, অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি।

শাক্ত পদাবলীর কবি—রামপ্রসাদ সেন ও কমলাকান্ত ভট্টাচার্য/কৃত্তিবাস ওঝা ও কাশীরাম দাস/বড়ুচন্ডীদাস ও মালাধর বসু/কানাহরি দত্ত ও বিজয় গুপ্ত

দৌলতকাজীর কাব্যের নাম—সতী পদ্মাবতী/সতী অনুসূয়া/সতী ময়না/মীরাবাঈ। আলাওলের কাব্যের নাম- চৈতন্যমঙ্গল/পদ্মাবতী/আগমনী/বিজয়া।

নাথ সাহিত্যের কবি—ফয়জুল্লা, শ্যামদাস সেন।

বোধ পরীক্ষণ ঃ (মান-১০+৫-১৫)

বালকদিগের সর্দার ফটিক চক্রবর্তীর মাথায় চট্‌ করিয়া একটা নূতন ভাবোদয় হইল, নদীর ধারে একটা প্রকান্ড শালকাষ্ঠ মাস্তুলে রূপান্তরিত হইবার প্রতীক্ষায় পড়িয়া ছিল, স্থির হইল, সেটা সকলে মিলিয়া গড়াইয়া লইয়া যাইবে। যে ব্যক্তির কাঠ, আবশ্যক-কালে তাহার যে কতখানি বিস্ময় বিরক্তি এবং অসুবিধা বোধ হইবে, তাহাই উপলব্ধি করিয়া বালকেরা এ প্রস্তাবে সম্পূর্ণ অনুমোদন করিল। কোমর বাঁধিয়া সকলেই যখন মনোযোগের সহিত কার্যে প্রবৃত্ত হইবার উপক্রম করিতেছে এমন সময়ে ফটিকের কনিষ্ঠ মাখনলাল গম্ভীরভাবে সেই গুঁড়ির উপর গিয়া বসিল, ছেলেরা তাহার এইরূপ উদার ঔদাসীন্য দেখিয়া কিছু বিমর্ষ হইয়া গেল । একজন আসিয়া ভয়ে ভয়ে তাহাকে একটু-আধটু ঠেলিল, কিন্তু সে তাহাতে কিছুমাত্র বিচলিত হইল না, এই অকাল-তত্ত্বজ্ঞানী মানব সকল প্রকার ক্রীড়ার অসারতা সম্বন্ধে নীরবে চিন্তা করিতে লাগিল। ফটিক আসিয়া আস্ফালন করিয়া কহিল, “দেখ, মার খাবি। এইবেলা ওঠ।” সে তাহাতে আরো একটু নড়িয়াচড়িয়া আসনটি বেশ স্থায়ীরূপে দখল করিয়া লইল।

এরূপ স্থলে সাধারণের নিকট রাজসম্মান রক্ষা করিতে হইল অবাধ্য ভাতার গন্ডদেশে অনতিবিলম্বে এক চড় কষাইয়া


দেওয়া ফটিকের কর্তব্য ছিল—সাহস হইল না। কিন্তু, এমন একটা ভাব ধারণ করিল, যেন ইচ্ছা করিলেই এখনি উহাকে রীতিমত শাসন করিয়া দিতে পারে, কিন্তু করিল না, কারণ, পূর্বাপেক্ষা আর -একটা ভালো খেলা মাথায় উদয় হইয়াছে, তাহাতে আর একটু বেশি মজা আছে। প্রস্তাব করিল, মাখনকে সুদ্ধ কৈাঠ গড়াইতে আরম্ভ করা যাক। মাখন মনে করিল, ইহাতে তাহার গৌরব আছে, কিন্তু অন্যান্য পার্থিব গৌরবের ন্যায় ইহার আনুষঙ্গিক যে বিপদের সম্ভাবনাও আছে, তাহা তাহার কিংবা আর কাহারও মনে উদয় হয় নাই ।

ছেলেরা কোমর বাঁধিয়া ঠেলিতে আরম্ভ করিল—‘মারো ঠেলা হেঁইয়ো, সাবাস জোয়ান হেঁইয়ো।' গুঁড়ি এক পাক ঘুরিতে-না-ঘুরিতেই মাখন তাহার গাম্ভীর্য গৌরব এবং তত্ত্বজ্ঞান-সমতে ভূমিসাৎ হইয়া গেল। খেলার আরম্ভেই এইরূপ আশাতীত ফল লাভ করিয়া অন্যান্য বালকেরা বিশেষ হৃষ্ট হইয়া উঠিল, কিন্তু ফটিক কিছু শশব্যস্ত হইল। মাখন তৎক্ষণাৎ ভূমিশয্যা ছাড়িয়া ফটিকের উপরে গিয়া পড়িল, একেবারে অন্ধভাবে মারিতে লাগিল। তাহার নাকে মুখে আঁচড় কাটিয়া কাঁদিতে কাঁদিতে গৃহাভিমুখে গমন করিল। খেলা ভাঙিয়া গেল.

মোট ১০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে

বালকদের সর্দারটির নাম কী? তার ভাইয়ের নাম কী ?

বালক সর্দার বন্ধুদের সঙ্গে কী করছিল?

“দেখ, মার খাবি। এইবেলা ওঠ।”-কে কেন এই কথাটি বলেছে ?

সন্ধি বিচ্ছেদ করো— প্রতীক্ষা, শশব্যস্ত, আশাতীত, গৃহাভিমুখে, পূর্বাপেক্ষা। সমাস নির্ণয়-রাজসম্মান, ভাবোদয়, অনতিবিলম্ব।

সতত, হে নদ, তুমি পড় মোর মনে। সতত, তোমার কথা ভাবি এ বিরলে,

সতত (যেমতি লোক নিশার স্বপনে শোনে মায়া-যন্ত্রধ্বনি) তব কলকলে জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে ! বহু দেশে দেখিয়াছি বহু নদ-দলে, কিন্তু এ স্নেহের তৃষা মিটে কার জলে ? দুগ্ধস্রোতরূপী তুমি জন্মভূমি-স্তনে।

আর কি হে রবে দেখা? যত দিন যাবে, প্রজারূপে রাজরূপ সাগরের দিতে বারিরূপ কর তুমি, এ মিনতি, গাবে বঙ্গজ-জনের কানে, সখে, সখা-রীতে নাম তার, এ প্রবাসে মজি প্রেম-ভাবে

লইছে যে তব নাম বঙ্গের সংগীতে এই কবিতায় কবি কার কথা বারবার মনে করেছেন?

‘দুগ্ধস্রোতরূপী তুমি জন্মভুমি- স্তনে।’– কবি কেন ‘দুগ্ধস্রোতরূপী’ বলতে কি বোঝাতে চেয়েছেন?

শব্দার্থ লেখো— ভ্রান্তি, সতত, বাড়ি, গাবে, সখা।

বাক্য রচনা লেখো—মিনতি, তৃষা, প্রবাস, জন্মভূমি, বিরলে।

SECTION - C

অনুচ্ছেদ রচনা ঃ (মান-১০)

পরিবেশ দূষণ (অনুচ্ছেদ রচনা)

(পরিবেশ বিষয়ক কিছু এলে এটাই লিখবেন)

সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের মধ্য দিয়ে মানুষ প্রকৃতিকে বশ করে গড়ে তুলেছে নিজের পরিবেশ। প্রকৃতির বহু বিচিত্র দান, মানুষের বুদ্ধি আর নিরন্তর শ্রমের ফলে নির্মিত হয়েছে আধুনিক সভ্যতা। অথচ প্রকৃতির দানকে অস্বীকার করে মানুষ আজ নিজ হাতেই হস করে চলেছে তাকে। মানুষের অসাবধানতা ও লোভের কারণে ভয়াবহভাবে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।

পরিবেশ দূষণ মূলত দুটি কারণে হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে প্রকৃতিগত কারণ, যেমন-ঝড়-বন্যা, জলোচ্ছাস, অগ্ন্যুৎপাত, ভূমিকম্প ইত্যাদি। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে মানব সৃষ্টি যা কৃত্রিম, যেমন—পানিদূষণ, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, তেজস্ক্রিয় দূষণ প্রভৃতি। শিল্পকারখানার বর্জ্য, যানবাহনের বিষাক্ত ধোয়া ইত্যাদি বায়ুতে মিশে দূষিত করছে পরিবেশকে। বিভিন্ন জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়ানোর ফলে বাতাসে বেড়ে যাচ্ছে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ। পৃথিবীর নদনদী, সমুদ্র, পুকুর, খালবিলের পানি প্রতিদিন দূষিত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। কলকারখানার বর্জ্য, ফসলি জমিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক ইতাদি জলকে বিষক্ত করে তুলছে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, যত্রতত্র আবর্জনা ফেলা, জমিতে বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যহার ইত্যাদি কারণে বাড়ছে মাটিদূষণ। তাছাড়া গাড়ির তীব্র হর্ণ, মাইকের যথেচ্ছ ব্যবহার, কলকারখানার যন্ত্রের বিকট শব্দ ইত্যাদি শব্দদূষণের মূল কারণ।

সব মিলিয়ে পরিবেশ দূষণ বর্তমানে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ভারতের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে দূষণের মাত্রা আরও ভয়াবহ। পরিবেশ দূষণের ফলে বদলে যাচ্ছে পৃথিবীর জলবায়ু। গ্রিনহাউস ইফেক্টের কারণে প্রতিনিয়ত বাড়ছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা। বিভিন্ন ধরনের দূরারোগ্য রোগ-ব্যাধির প্রকোপ বাড়ছে। তাই দূষণের কারণে সারা বিশ্বের পরিবেশই আজ হুমকির সম্মুখীন।

পরিবেশ রক্ষায় আমাদের সচেতনতাই মুখ্য। কলকারখানা, যানবাহনসহ আধুনিক সমস্ত সুযোগ-সুবিধাকে পরিবেশবান্ধব করে গড়ে তোলার বিকল্প নেই। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস খুঁজে বের করে এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। প্রচুর গাছপালা রোপণ করে পরিবেশকে সবুজে ভরিয়ে তুলতে হবে। এছাড়া পরিবেশ দূষণ রোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। মনোকতে হবে, বসবাস উপযোগী প্রাকৃতিক পরিবেশ হারিয়ে গেলে মানুষসহ সকল জীবের জন্যেই পৃথিবীতে টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই পরিবেশ যাতে দূষিত না হয় সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের সুরে আমাদেরও অঙ্গীকার নিতে হবে।

—চলে যাব—তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্ৰাণ

প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,

এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি

নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।

নারীশিক্ষা (অনুচ্ছেদ রচনা)

(নারী বিষয়ক কিছু এলে এটাই লিখবেন)

মানুষের মনুষ্যত্ব বিকাশের জন্য শিক্ষার জন্য। মা হচ্ছে একজন সন্তানের প্রথম শিক্ষক। ‘আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদেরকে একটি শিক্ষিত জাতি দেব'—নেপলিয়নের এই চিরস্মরণীয় কথার প্রতিধ্বনি আজও বিশ্বব্যাপী অনুরণিত হচ্ছে। বিশ্বের লক্ষ লক্ষ নারী বর্তমান সময়েও শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। ফলেসন্তানের প্রথম শিক্ষকই থেকে যাচ্ছে শিক্ষার অন্তরালে। সন্তান শিক্ষিত না হলে স্বাভাবিকভাবেই জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার কেননা আজকের শিশুই আগামী দিনের কর্ণধার। ফলে একটি দেশের সমাজ, রাষ্ট্র, পরিবারের উন্নয়ন ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায়, এমনকি ব্যক্তিগত উৎকর্ষের ক্ষেত্রেও নারীশিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সারাজীবন নারীশিক্ষার জন্য আন্দোলন করে গেছেন। তিনি অনুধাবন করতে পেরেছিলেন, পুরুষের পাশাপাশি নারীকেও হতে হবে শিক্ষিত ও স্বাবলম্বী। বাঙালি পুরুষ কখনোই একাকী উন্নতির শিখরে আরোহম করতে পারবে না আজ একবিংশ শতাব্দীর এই অগ্রগতির সময়েও আমাদের অধিকাংশ নারী শিক্ষাবঞ্চিত । ফলে নারীশিক্ষার অগ্রগতির জন্য নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা একান্ত জরুরী। নারী নির্যাতন ও বাল্যবিবাহ বন্ধ করে নারীশিক্ষা গ্রহণের পথকে সুগম করতে হবে। বয়স্ক নারীদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থাকে অবৈতনিক করতে হবে। বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করে দেরি ও সুবিধাবঞ্চিত নারীদের সহায়তা করতে হবে। এছাড়াও এ বিষয়ে আগামী প্রজন্মকে সচেতন করতে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে হবে। সর্বোপরি, নারীশিক্ষার ব্যাপক অগ্রগতি সাধনের লক্ষ্যে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

একটি দেশের সার্বিক উন্নয়ন মূলত এর জনগোষ্ঠীর শিক্ষর উপর নির্ভরশীল। আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই নারী। কোন দেশ জনসংখ্যার এই বৃহৎ অংশকে এড়িয়ে তার সমৃদ্ধির আশা করতে পারে না। তাই প্রত্যেক দেশের জন্য নারীশিক্ষা অপরিহার্য। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই যে, আমাদের দেশে নারী শিক্ষার অবস্থা খুব একটা সন্তোষজনক নয়।

নারীশিক্ষার প্রধান অন্তরায় হল দরিদ্রতা। বাল্যবিবাহও নারীশিক্ষার পথে একটি প্রধান বাধা। এ প্রতিবন্ধকতাগুলোর পেছনে রয়েছে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা, সামাজিক কুসংস্কার, রীতিনীতি, মেয়েদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ, নারীশিক্ষার প্রতি ভ্রান্ত ধারণা ইত্যাদি। এ সমস্ত প্রতিবন্ধকতার কারণে নারীশিক্ষা চরমভাবে বিঘ্নিত হয়। ফলশ্রুতিতে নারীরা বঞ্চিত হচ্ছে তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে।

তাই নারীদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। তাদের শিক্ষার ব্যাপারে আমাদেরকে সর্বোচ্চ সচেতন হতে হবে। ধর্মীয় বাধা, সামাজিক কুসংস্কার, আর্থিক দারিদ্র্য ইত্যাদি অন্তরায় কাটিয়ে শিক্ষার ক্ষেত্রে নারীর এগিয়ে আসার জন্য প্রণোদনা সৃষ্টি করতে হবে এবং সেজন্য দেশে নারী মুক্তি আন্দোলন জোরদার করতে হবে। মেয়েদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, যেন স্কুল বা কলেজগামী কোন ছাত্রী কোনভাবে নির্যাতনের শিকার না হয়। কোন মেয়েকে তার অমতে বিয়ে দেওয়া, লেখাপড়া বন্ধ করে দেওয়া এবং ১৮ বছরের নিচে বিয়ে দেওয়া বন্ধ করতে হবে।

বর্তমানে নারীশিক্ষাকে উৎসাহিত করতে ইতিমধ্যে আমাদের সরকার নারীদের বৃত্তি প্রদান, অধিক নারী শিক্ষিকা নিয়োগ উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত অবৈতনিক নারীশিক্ষার মত বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকারের এসব উদ্যোগ যেন যথাযথভাবে প্রয়োগ হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। যুগ যুগ ধরে যে নারী চোখের জলের কোন মূল্য পায়নি, যে নারী ব্যবহৃত হয়েছে অন্তঃপুরের খেলার পুতুল হিসাবে, আধুনিক সমাজে সে নারীকে দাঁড়াতে হবে শিক্ষিক, মার্জিত, আলোকিত মানুষ হিসেবে। তাহলেই সমাজে ফিরে আসবে নারীর মর্যাদা। এক্ষেত্রে নারী শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। 

রবীন্দ্রনাথের মত আমাদেরও বলতে হবে—“নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার, কেন নাহি দিবে অধিকার, হে বিধাতা?

মানব জীবনে সাহিত্যের প্রভাব

(সাহিত্য বিষয়ক কিছু এলে এটাই লিখবেন)

সাহিত্য কথার অর্থ হল পারস্পরিক সম্পর্ক। সৃষ্টির শুরু থেকে মানুষ শুধু নিজেকে জেনেই থেমে থাকে নি। মানুষ অপরকেও জানতে চেয়েছে। জানানোর এই আনন্দ থেকেই সাহিত্যের সূচনা। একদিকে বহিঃ প্রকৃতি অন্য দিকে মানব হৃদয় ও মনের চরিত্র সাহিত্যিকের হৃদয়ের অন্তরে যে ঢেউয়ের উত্থান তার ভাষাগত প্রকাশই হল সাহিত্য।

সাহিত্য পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম। সেইগুলি হল যথাক্রমে—

সাহিত্য আমাদের সত্য জানতে সাহায্য করে।

সাহিত্য মানুষ্যত্বের সর্বাঙ্গীন বিকাশ ঘটায়।

সাহিত্য আমাদের ন্যায় অন্যায়ের বিচারে সাহায্য করে ও মুক্তি ও কল্যাণের পথে চালিত করে।

সাহত্যি শুধুমাত্র নিজের ব্যক্তিগত চাহিদা মেটায় না, সাহিত্য পাঠের মধ্য দিয়ে আমরা সর্বকালীন মানুষ এবং অতীতের জীবন ধারাকে যেরকম জানতে পারি তেমনি অন্য ভাষার সাহিত্যের মধ্য দিয়ে অন্যান্য দেশের জীবনধারা সম্পর্কে ও জানতে পারি

সাহিত্যে মধ্য দিয়ে আমরা যেমন অতীত সম্পর্ক জানতে পারি তেমনি আমাদের নিজস্ব চিন্তাধারা ও ধ্যানধারণা কে আগত কালের জন্য লিপিবদ্ধ করে রাখতে পারি।

সাহিত্য পাঠের মধ্য দিয়ে আমরা যেমন সামাজিক রীতিনীতিকে প্রকাশ করি ঠিক তেমনি আমাদের চিত্য যখন আবেগে ব্যাকুল তখন তা প্রকাশের উপায় হলো সাহিত্য।

ইংরেজিতে একটা কথা আছে “Literature is the mirror of society” অর্থাৎ সাহিত্য রূপ দর্পণে সমকালের জীবন ও সমাজ প্রতিফলিত হয়। মধ্যযুগের সাহিত্যের মধ্যেও সমকালীন সমাজ ও জীবন সেখানে খুঁজে পাওয়া যায়। আর একালের মানবায়িত সাহিত্য মানুষের জীবন তথা সমাজকে এত খুঁটিয়ে তুলে ধরে যে সাহিত্য যথার্থই দর্পণ। বাস্তবের সেই হাসি কান্নার ঘটনাকে কেন্দ্র করেই আমারা পরে সুখ আনন্দ পাই। এটাই সাহিত্য পাঠের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক। সাহিত্য পাঠের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের নিজেদের কল্পনা শক্তির বিকাশ ঘটায়। কল্পনা শক্তির বিকাশ সাহিত্যে একটি উল্লেখযোগ্য দিক। কোনো চিত্রধর্মী বর্ণনা ও বিশ্বাসযোগ্য চরিত্রের খোঁজ সাহিত্যের মধ্যে পাওয়া গেলে তা আমাদের ভিন্ন জগতের মানুষ গড়ে তোলে । এছাড়া আমরা যখন কোনো জীবনী সাহিত্য পড়ি তখন আমাদের এক অসীম অনন্তের বার্তা নিজেদেরকে বিস্মৃত করে। ভ্রমণ সাহিত্য পাঠের মধ্য দিয়ে আমাদের মানব ভ্রমণ সম্পূর্ণ হয়। যেমন কালিদাসের মেঘদূত”। আমরা অনেকে অবসরের সময় বই পড়ে কাটায়। তাই বইকে অবসরের সঙ্গী বলা যায়। বিভিন্ন বয়সের মানুষ অবসর কাটায় বিভিন্ন ও ধরনের গ্রন্থ পড়ে। একটা ছোট্ট শিশু রূপকথার গল্প শুনতে ভালোবাসে। সে রূপকথার গল্প শুনে নিজের মধ্যে আনন্দ উপভোগ করে। কিশোর বয়সের মানুষ খোঁজে অ্যাডভেঞ্চার বিষয়ক রচনা। কারণ এই বয়সের কিশোর কিশোরীরা এই রচনার মধ্যেই পেয়ে যায় আবেগের খোরাক। আর একটু বয়সে তরুণ তরুণীরা রোমান্স ধর্মী সাহিত্য


খোঁজে কারণ এর মধ্য দিয়ে তারা জীবনের উপকরণকে খুঁজে পায়। আর পরিণত বয়সের মানুষেরা গল্প আর উপন্যাস পড়তে ভালোবাসে। তারা এই গল্প আর উপন্যাস পড়ে জীবনের গভীর ও তথ্যমূলক বিষয়গুলোকে আত্মস্থ করে। একাল হল বিজ্ঞানের যুগ সেই সঙ্গে বোধ হয় একাকিত্বের যুগও। বর্তমান নিঃসঙ্গ বিচ্ছিন্ন জীবনে সাহিত্য নিয়ে আসতে পারে অপার আনন্দ। কারণ সাহিত্যের মধ্য দিয়ে বাস্তব জীবন বাড়িয়ে এক অসীমের ইসারা ফুটে ওঠে তার মধ্য দিয়ে আমরা অনুভব করতে পারি জীবনের নতুন মূল্য। তাই এই টেকনোলজির যুগে সাহিত্যকে আঁকড়ে ধরলে আমরা ব্যর্থ হব না।

আধুনিক জীবনে বিজ্ঞান প্রযুক্তি

(বিজ্ঞান বিষয়ক কিছু এলে এটাই লিখবেন)

মানুষের আধুনিক জীবনযাপন প্রণালী, আধুনিক জীবনভাবনা ও চেতনা সম্পূর্ণরূপে প্রযুক্তির সৃষ্টি। তাই প্রযুক্তিকে বাদ দিয়ে আধুনিক জীবনের কথা চিন্তাই করা যায় না। প্রযুক্তিবিদ্যার কল্যাণেই মানবজীবনের যাবতীয় সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য সম্পাদিত হচ্ছে যা কিছু ধ্বংসাত্মক তাও প্রযুক্তিরই কল্যাণে। প্রযুক্তির চরিত্র বৈশ্বিক। এ কারণেই সমগ্র বিশ্ব আজ একটা ‘গ্লোবাল সিটি’তে পরিণত হয়েছে। এ যেন আধুনিক জীবন-আধুনিক মানুষ আধুনিক বিশ্ব।

আধুনিক জীবনের স্বরূপ ঃ সাম্প্রতিকালে মানুষের জীবনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষণীয়। মানবজীবন বর্তমানে যে সভ্যতায় স্নাত, তা বিজ্ঞানেরই প্রভাবের ফল। মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। বিশ্বে জনসংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধির ফলে মানুষের জীবনে সমস্যার জটিলতা বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকে বেশি। সেসব জটিলতার অবসানের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। মানুষের অদম্য আগ্রহ থেকে বিজ্ঞানের বিকাশ। আর এ বিকাশের ফলে সমৃদ্ধ হয়েছে মানুষের জীবন।

আধুনিক জীবনব্যবস্থা বিজ্ঞানের সাহায্য ছাড় অচল। বর্তমান মানুষের শিক্ষা-দ চা-দীক্ষা ও জ্ঞান গরিমায় যেমন বিজ্ঞানের প্রভাব পড়েছে, তেমনি মানুষের অপরাপর ক্ষেত্রে। যেমন-স্বাস্থ্য, বাসস্থান, যোগাযোগ, বিনোদন ইত্যাদিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সর্বাত্মক ভূমিকা রাখছে। সাম্প্রতিককালে তথ্যপ্রযুক্তির যে বিস্ময়কর উন্নতি সাধিত হয়েছে, তা বিজ্ঞানেরই দান। যোগাযোগের অভূতপূর্ব উন্নতির ফলে সারা বিশ্ব এখন কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসাক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য মানুষের আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। বিনোদনের জন্য এসেছে বিচিত্র উপকরণ। এভাবে আধুনিক জীবন যথার্থই অগ্রগতির স্বাক্ষর বহন করছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অনুদানেই আধুনিক জীবন যথার্থ সমৃদ্ধ আধুনিক জীবনে প্রযুক্তি ঃ একুবনযাত্রা

নির্ভর। শহরে নগরে যে আকাশচুম্বী বহুতল ভবন গড়ে উঠছে, আমরা যেখাস, কার, ট্যাক্সিতে যাতায়াত করছি তা প্রযুক্তিবিজ্ঞানের অবদান। বাষ্প, বিদ্যুৎ ও পারমাণবিক শক্তিচালিত রেল ও স্টিমার পরিবহন ব্যবস্থায় এনেছে যুগান্তর। প্রযুক্তির কল্যাণে ঘরে ঘরে, বৈদ্যুতিক আলো জ্বলছে, পাখা, হিটার, রেডিও, টিভি, ফ্রিজ, ভিসিআর, ভিসিপি, লিফট, এয়ারকুলার, কম্পিউটার চলছে। অফিসে, আদালতে, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে, সংবাদপত্রের অফিসে যে ক্যালকুলেটর, টাইপরাইটার, ফটোকপিয়ার, ফ্যাক, কম্পিউটার ইত্যাদি ব্যবহৃত তাও সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তির কল্যাণে।

এক কথায় আধুনিক যুগের মূল ভিত্তি হচ্ছে প্রযুক্তি। অটোমেশিন বা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র আধুনিককালে মানুষের জীবনে নতুন অধ্যায়ে সূচনা করেছে। ইলেকট্রনিক্স প্রযুক্তি বিজ্ঞানের মেলবন্ধন সৃষ্টি হয়েছে কম্পিউটার ও রোবটের মতো অভাবনীয় যন্ত্র। বিনোদন থেকে শুরু করে যুগান্তকারী সব সাফল্যের পেছনেও রয়েছে প্রযুক্তি বিজ্ঞানের ভূমিকা।

প্রযুক্তির উদ্ভব ঃ জীবনের প্রয়োজনে স্বাচ্ছন্দ্য বিধানে বিজ্ঞানকে কাজে লাগানোর প্রয়াস মানুষের দীর্ঘদিনের। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিদ্যার বয়স দৃশ বছরের বেশি নয়। ইংল্যান্ডেই প্রথম এ বিদ্যাকে প্রযুক্তি তথা প্ৰয়োগ বিজ্ঞানকে আত্মস্থ করে এবং কাজে লাগায় । প্রযুক্তির প্রসারের ফলে সেখানে শিল্পবিপ্লব ঘটে। নানা প্রকার যন্ত্রপাতি মানুষের জীবনধারা বদলে দেয়।

অন্যান্য দেশেও এর ব্যবহার শুরু হয় এবং তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। তবে পশ্চিমা দেশগুলোই শিল্পবিপ্লবের প্রধান ধারক ও বাহক। প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যে দেশ যত অগ্রগামী সে দেশ তত উন্নত, তত আধুনিক জীবনের অধিকারী। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি হাতে হাত ধরে চলছে ক্রমাগত। আজও তার চলার বিরাম নেই। নব নব প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে এবং ব্যবহারিক জীবনে তাকে কাজে লাগিয়ে আধুনিক মানুষ হয়ে উঠছে আরো আধুনিক।

ক্রমবিকাশের প্রথম যুগ প্রযুক্তির যুগ ছিল বাষ্পীয় যন্ত্রের। এর মাধ্যমে ধীর গতির পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থায়


পালাবদল ঘটে। বিদ্যুতের আবিষ্কারের পর প্রযুক্তির ইতিহাসে সৃষ্টি হয় নবযুগ। বিদ্যুতের ব্যাপক প্রয়োগিক কৌশল শিল্পক্ষেত্রে বিপ্লব সংঘটিত করে। শুরু হয় দ্বিতীয় যুগের। নব নব শিল্প-কারখানা স্থাপন এবং তার উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী মানুষের জীবন প্রণালীতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটায়। মানুষ নতুন এক জীবন আধুনিক জীবন লাভ করল। অবশেষে প্রযুক্তি এসে এ যুগকে বলীয়ান করে তুলেছে। শুধু বলীয়ান নয়, আধুনিক বিশ্বের আধুনিক মানুষের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করছে প্রযুক্তি। প্রযুক্তিই এখন আধুনিক মানবজীবনের নিয়ামক। কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নির্মাণ, স্থাপত্য, যোগাযোগ, পরিবহন, তথ্য—সব ক্ষেত্রেই প্রযুক্তির জয়জয়কার। নিদ্রায়, জাগরণে, যুদ্ধে, এককথায় জীবনে এবং মন্ত্রণে আধুনিক প্রযুক্তি এখন মানুষের নিত্যসঙ্গী।

প্রযুক্তির অগ্রগতি ও জীবনের উন্নয়ন : আধুনিক বিশ্বে মানবজীবনের যে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, তা প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ফল। মানুষ প্রতিনিয়ত গবেষণার মাধ্যমে প্রযুক্তির উন্নতি সাধন করছে। বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কার মানবজীবনেক সুখ-সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ করে তুলেছে। মানুষর অভাব দূর হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে। মানুষ রোগের যন্ত্রণা থেকে রেহাই পাচ্ছে আধুনিক উন্নত ধরনের চিকিৎসায়। জীবনের সকল পর্যায়ে সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এসেছে প্রযুক্তিবিদ্যা।

বিজ্ঞানের জ্ঞান বিভিন্ন আবিষ্কার ও উৎপাদনের মাধ্যমে প্রযুক্তিতে রূপলাভ করে মানুষের জীবনের প্রয়োজন মেটাচ্ছে। মানব জীবন বিকাশের যথার্থ উপায় এখন প্রযুক্তিবিদ্যা। প্রযুক্তি মানবজীবনকে নব চেতনায় সমৃদ্ধ করেছে। সারা বিশ্বে উন্নতির যে ধারা প্রবাহিত হচ্ছে, তা এক দেশের প্রযুক্তি অন্য দেশে সরবরাহের ফলে। উৎপাদনের সকল ক্ষেত্রে প্রযুক্তিবিদ্যার ব্যাপক ব্যবহারের ফলে পণ্যসামগ্রীতে এসেছে বৈচিত্র্য ও উৎকর্য। এখন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের প্রযুক্তিকে সহায়ক হিসেবে প্রয়োগ করা হচ্ছে।

উপসংহার ঃ আধুনিক যুগে প্রযুক্তিবিদ্যার বিস্ময়কর বিকাশে সারা পৃথিবী জুড়ে নবচেতনার সঞ্চার হয়েছে এবং তা পৃথিবীকে দ্রুত উন্নয়নের দিকে পরিচালিত করছে। এক দেশের উল্লবিত প্রযুক্তি চালান হচ্ছে অন্য দেশে। প্রযুক্তি জ্ঞানের সুযোগসুবিধা গ্রহণ করছে সব দেশ। অনুন্নত দেশের উন্নতির জন্য প্রযুক্তি আহরণ একটি কার্যকর পন্থা। আবার কোনো দেশের প্রযুক্তিবিদ্যার সুষ্ঠু রূপায়ণের জন্য কাঁচামাল যোগাচ্ছে অন্য দেশ। তাই এখন প্রযুক্তি যাদের হাতে তারাই সর্বাধিক সমৃদ্ধ । তারা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে প্রযুক্তিকে সহায়ক হিসেবে ব্যবহার করছে। প্রযুক্তি সরবরাহের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে সারা বিশ্বে পারস্পরিক সহযোগিতা। আধুনিক জীবনকে সুখকর করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে এসব প্রযুক্তি।


SECTION - D ব্যাকরণ

বাংলা ভাষার ‘দ্বি-স্বর ও ধ্বনি কাকে বলে ? বাংলা ভাষায় অর্ধস্বর ধ্বনি কাকে বলে ?

বাংলা বর্ণমালায় ‘ঔ’ স্বরের উচ্চারণ দুখানা। ও + ই = ঐ এবং ও + উ = ঔ। এদের বলে দ্বিস্বর। এছাড়া আরও দ্বিস্বর আছে যেমন—অত্র = অয় (হয়), অও(হও), আই (তাই), আট্ (ঝাউ), আত্র আয় (আয়, হায়), আত্‌ (যাও), আত্ (যাও), ইই (দিই) ইত্যাদি। বাংলা ভাষায় স্বরধ্বনিগুলির মধ্যে দ্বিস্বরের গুরুত্বই বেশি। কারণ দ্বিস্বরের লিখিত বর্ণ চিহ্ন আছে। প্রাচীন ও মধ্য বাংলাতে দ্বিস্বরের প্রচলন ছিল।

অর্ধস্বর : আধখানা উচ্চারিত হওয়া স্বর হল অর্ধস্বর। ‘মই’ কথাটার-ই উচ্চারিত হচ্ছে আধখানা। কিন্তু ময়ী কথাটির ই উচ্চারিত হচ্ছে পুরো। গাধখানা উচ্চারিত স্বরেরতলায় হসন্ত দিয়ে বোঝাচ্ছি- আমরা। বাংলায় আছে মোট এরকম চারটি অর্ধস্বর ই, উ, এ, ও। একে লেখার সময় আমরা লিখি ‘য়’হিসাবে, যার উচ্চারণ হসন্ত। অর্থাৎ তারপরে কোনো স্বর উচ্চারিত হয় না, যেমন—হয়। ধ্বনি, বর্ণ ও অক্ষরের সংজ্ঞা লেখ।

ধ্বনি-- মানুষের বাগযন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত সুস্পষ্ট অর্থবোধক আওয়াজ (Sound) কেই ধ্বনি বলে। বৰ্ণ-মানুষ ধ্বনি সমূহকে লিপিবদ্ধ করে রাখার যখন প্রয়োজন উপলব্ধি করে তখন ধ্বনির লিপিবদ্ধ রূপই হয় বর্ণ । অর্থাৎ মানুষ যে কথা বলে তা কতগুলি ধ্বনির সমষ্টি, বর্ণ ধ্বনিরই সংকেত বা প্রতীক, যেমন একটি শব্দকে বিশ্লেষণ করলে আমরা কতকগুলি ধ্বনি পাই। অ উচ্চারণে যে ধ্বনি হয় ‘অ’ বর্ণটিতার দৃশ্যরূপ বা প্রতীক চিহ্ন ।

অক্ষর— কোনো শব্দ উচ্চারণের সময় তার যে পরিমাণ অংশ বাগযন্ত্রের স্বাভাবিক প্রয়াসে একসঙ্গে উচ্চারিত হয় সেই পরিমাণ অংশকে অক্ষর বলে। যেমন— শিস্, যাক্ ডা-কুক্ ইত্যাদি।

ব্যঞ্জনধ্বনি কাকে বলে ?

জিভ আর ঠোট ব্যঞ্জনধ্বনির উচ্চারণে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে। কণ্ঠনালির স্বরপল্লবের কম্পনে যে ধ্বনির সৃষ্টি হল, তা স্বরধ্বনির ক্ষেত্রে বিনা বাধায় প্রকাশিত হয় এবং স্বধ্বনিই আমরা স্পষ্টভাবে শুনতে পাই। কিন্তু ব্যঞ্জনের উচ্চারণ এই ধ্বনির নির্গমে বাধা ঘটিয়ে করতে হয়। জিভের দ্বারা তালুতে অর্থাৎ মুখের ছাদে নানা জায়গা ছুঁয়ে কিংবা ঠোঁটদুটি বন্ধ করে ধ্বনিবাহী বহির্গামী বাতাসের পথ রুদ্ধ বা নিঃশব্দ। তা আমরা শুনতে পাই না, তার ব্যঞ্জন বা আভাস মাত্র পাই। সেইজন্যই এর নাম ব্যঞ্জনধ্বনি। চলিত বাংলা ভাষার তিরিশটি ব্যঞ্জনধ্বনির উচ্চারণকালে বাগযন্ত্রের কোন্ অংশ কী কাজ করে তা লক্ষ করা যাক— খ্ ঘ ঙ : জিভের পিছনটা একটু উঁচু হয়ে আলজিভের গোড়ার কাছাকাছি নরম তালু ছুঁয়ে ফেলে। চ্ ছ জ ঝু শ্ঃ জিভের সামনের অংশটা তালুর সামনের শক্ত অংশ ছুঁয়ে থাকে।

ট্ জ্ ড্ হ্ র্ ড্ ঃ জিভের ডগা উল্টে গিয়ে তালুর অপরের অংশে ঘা দেয়।

পস্ ঃ জিভের ডগা উল্টে গিয়ে তালুর উপরের অংশে ঘা দেয়। জিভের ডগা উপরের পাটির মাঝামাঝি দাঁতের ঠিক উপরে মাড়িতে সংলগ্ন হয়ে থাকে।

প্ ফ্ ভ্ ম্ ল্  ঃ ঠোঁট দুটি পুরোপুরি অথবা প্রায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ডিভের ডগা কখনো উপরে পাটির মাঝামাঝি দাঁতের ঠিক ওপরের মাড়িতে আটকে থাকে (‘আলতা’-র ল্), আবার কখনো জিভের ডগা উল্টে গিয়ে তালুর উপরের অংশে গা দেয় (‘উল্টা'-র ল)।

হঃ ফুসফুস থেকে শ্বাসনালির পথে বাতাস যখন ধ্বনি বয়ে নিয়ে মুখের ভিতরের দিকে আসতে থাকে, তখন শ্বাসনালিতে একটু চাপ পড়ে। এইভাবে বাগযন্ত্রের নানাস্থানে বাধা পেয়ে ব্যঞ্জনধ্বনি সৃষ্টি হয়।

লিপি কাকে বলে ?

আমরা মুখে যে ধ্বনি উচ্চারিত করি সেই ধ্বনিক লিখিত রূপ দেওয়ার এবং পারস্পরিক যোগাযোগ রক্ষা করার প্রয়োজনে যে চিহ্ন ব্যবহার করি, তাকে লিপি বলে।

ভারতের লিপি কোনটি, কোনটি থেকে বাংলা লিপির উদ্ভব?

ভারতবর্ষের প্রাচীনতম লিপিমারা দুটি খরোষ্ঠী এবং ব্রাহ্মী, যেগুলি অশোকের অনুশাসন শিলালিপিতে প্রথম পাওয়া যায় । ব্যঞ্জনসন্ধির কতকগুলি নিয়ম বা সূত্র আছে ও কী কী? (যে কোনো ২/৪ টি নিয়ম উল্লেখ করবে

যে সন্ধিতে স্বরধ্বনির সঙ্গে ব্যঞ্জনধ্বনির মিলন বা ব্যঞ্জনধ্বনির সঙ্গে ব্যঞ্জনধ্বনির মিলন হয়, তাকে ব্যঞ্জনধ্বনি বলে। এই ব্যঞ্জনসন্ধির সূত্রগুলি হল নিম্নরূপ—

১) স্বরবর্ণ পরে থাকলে তার পূর্বেকার ক্ চ্ ট্‌ প্ যথাক্রমে গ্ জ্ ড্ দ্ হয়ে যায় অর্থাৎ বর্গের প্রথম বর্ণ তৃতীয় বর্ণে পরিণত হয়। যেমন— দিক + অন্ত = দিগন্ত

২) প্রথম শব্দের শেষে যদি স্বরবর্ণ থাকে এবং পরের শব্দের প্রথমে যদি ‘ছ’থাকে, তাহলে ঐ ‘ছ’স্থানে ‘চ্ছ’হয়। যেমন— অ + ছ, এক + ছত্র = একচ্ছত্র।

৩) প্রথম শব্দের শেষে ব্যঞ্জন যদি বর্গের প্রথম বর্ণ হয় এবং পরের শব্দের প্রথম বর্ণটি যদি বর্গের তৃতীয় বা চতুর্থ বর্ণ হয় বা ফ্ র্ ল্ ব্ হ এর একটি হয়, তাহলে প্রথম বর্ণ তৃতীয় বর্ণে বদলে যাবো। যেমন-দিক্ + গজ = দিগ্‌গজ।

৪) বর্গের পঞ্চম বর্ণ (নাসিক্য বর্ণ) পরে থাকলে বর্গের প্রথম বর্ণ পঞ্চম বর্ণে রূপান্তরিত হবে। যেমন চিন্ময়। জগৎ + মাতা = জগন্মাতা।

৫) আগে ‘ম’ পরে ‘ন’ থাকেল দুইয়ে মিলে ‘ন্ন’ হবে। যেমন— সম্ + নিহিত = সন্নিহিত।

-চিৎ + ময় =

৬) প্রথম অংশের ত্ ‘-এর ঠিক পরে হ্ থাকলে দুটি বর্ণই বদলাবে, যেমন— উৎ+ হার = উদ্ধার। এছাড়াও কারও অনেকগুলি নিয়ম ব্যঞ্জনধ্বনিতে আছে—

(ক) যেমন— ‘দ’ ও ‘ধ’ এর পর কোনো বর্গের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ণ অথবা স পরে থাকলে ও দ্, ধূ স্থানে ত্ হয়। যেমন—তদ্+ সম্ = তৎসম।

খ) ‘জ’ বা ‘খ’ পরে থাকলে ত্ ও দ স্থানে ‘জ’ হয়। যেমন— উৎ+ জ্জ্বল = - উজ্জ্বল

গ) ‘শ’ পরে থাকলে ‘ত’ও ‘দ’, ‘চ’-এ পরিণত হয় ‘শ’ হয় ‘ছ’। যেমন— উৎ+ শৃঙ্খল = - উচ্ছৃঙ্খল।


ঘ) ‘ল’ বর্ণ পরে থাকলে ত্ ও দ্ তার প্রভাবে ‘ল্’ হয়ে যায়। যেমন— উৎ+ লাস = উল্লাস উৎ+ লিখিত = উল্লিখিত । ঙ) ‘চ’ বর্গের কোনো বর্ণের পর ন্ থাকলে তা ঞ হয়ে যায়। যেমন- রাজ্ + নী= রাজ্ঞী, যজ + ন = যজ্ঞ।

যে ব্যঞ্জনসন্ধি কোনো সূত্র বা নিয়মের মধ্যে পড়েনা, অথচ বহু প্রচলিত এদের বলে নিপাতনের সিদ্ধ ব্যঞ্জন সন্ধি। যেমন—বন + পতি= বনস্পতি ।

প্রশ্ন : বিসর্গ সন্ধির চারটি নিয়ম বা সূত্র উল্লেখ করো।

উঃ নিম্নরূপ-

বিসর্গের সঙ্গে স্বরধ্বনি বা ব্যঞ্জনধ্বনির মিলনে যে সন্ধি গড়ে ওঠে তার নাম বিসর্গসন্ধি । এই প্রকার সন্ধির নিয়মগুলি হল

(ক) অ-কারের বিসর্গ থাকলে ‘ও’ হয়। যেমন— ততঃ + অধিক = ততোধিক, যশঃ + অভিলাষ = যশোভিলাষ। (খ) বর্গের তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম বর্ণ এবং ফ্, র, ল্, র্, হ থাকলে ‘ও’কার হয়। যেমন— মনঃ + বীণা = মনোবীণা, যশঃ + লাভ = যশোলাভ । উপরের ব্যঞ্জনগুলি ছাড়া অন্য ব্যঞ্জন পরে থাকলে বিসর্গ বিসর্গই থাকে, সন্ধি হয় না। যেমন— অতঃ + পর = অতঃপর, মনঃ + কষ্ট = মনঃকষ্ট।

(গ) বিসর্গ যদি ‘রঃ’ জাত হয়, তাহলে সন্ধির পর ‘র’ হয়। প্রায়ই তা পরবর্তী স্বরসন্ধির সঙ্গে যুক্ত হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে রেফ্ হয়ে যায়. যেমন— পুনর্ + আগত = পুনরাগত, অন্তর + ঈক্ষ = অন্তরীক্ষ, অহর্ + অহ = অহরহ।

বিসর্গের পর র থাকলে ‘ই’ ও ‘উ’ কেবল ‘ঈ’বা ‘উ’ হয়। যেমন— নিঃ (নির্) + রোগ = নীরোগ, নিঃ (নির্) + রব = নীরব ।

(ঘ) ই বা উ স্বরের পর বিসর্গ থাকলে এবং দ্বিতীয় শব্দ বা প্রত্যয়ের প্রথমে—স্বরবর্ণ, বর্গের তৃতীয় চতুর্থ, পঞ্চম বর্ণ অথবা য, ল, ব, হ থাকলে বিসর্গ স্থানে 'র’ হয়। যেমন—নিঃ + অবধি = নিরবধি, নিঃ + আশ্রয় = নিরাশ্রয়, বহিঃ + গত = বহির্গত, অন্তঃ ESTD-2014 + গত = অন্তর্গত ।

প্রশ্ন ঃআমরা ব্যঞ্জনের উচ্চারণ শুনতে পাই না কেন ?

বেশিরভাগ ব্যঞ্জনের উচ্চারণ নিঃশব্দ। ব্যঞ্জনের উচ্চারণ ধ্বনির নির্গমে বাধা ঘটিয়ে করতে হয়। জিভের দ্বারা মুখের ছাদে অর্থাৎ তালুতে নানা জায়গা ছুঁয়ে কিংবা ঠোঁট দুটি বন্ধ করে ধ্বনিবাহী বহির্গামী বাতাসের পথ রুদ্ধ বা সংকীর্ণ করে ব্যঞ্জনধ্বনির উচ্চারণ ঘটাতে হয়। তাই আমরা ব্যঞ্জন উচ্চারণ শুনতে পাই না। আভাস মাত্র পাই।

প্রশ্নঃবাক্য কাকে বলে ?

বিভক্তিযুক্ত শব্দ যার দ্বারা কোনো একটি ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করা যায়, তাদের সমষ্টিকে অর্থাৎ সেই শব্দ সমষ্টিকে বাক্য বলে। যেমন—আমি বাড়ি যাব

প্রশ্ন ঃবাক্যে পদগুলির কী কী বৈশিষ্ট্য থাকা চাই ?

বাক্যে পদগুলির তিনটি বৈশিষ্ট্য থাকা চাই—(ক) আসত্তি (নৈকট্য) (খ) যোগ্যতা (অসংগতি না থাকা) (গ) আকাঙ্ক্ষা (ভাব পূর্ণরূপে প্রকাশ করার ক্ষমতা)। এগুলিকে একত্রে ত্রিসূত্র বলে।

প্রশ্নঃবাক্যের কটি অংশ ও কী কী?

প্রত্যেকটি বাক্যের দুটি প্রধান অংশ থাকে উদ্দেশ্য ও বিধেয়। উদ্দেশ্য অংশে কোনো ব্যক্তি, বস্তু বা বিষয় সম্পর্কে কিছু বলা হয়, আর বাক্যের যে অংশে উদ্দেশ্য সম্পর্কে কিছু বলা হয়, তাই হল বিধেয়। একটি বাক্যে—জাহাজ ক্রমেই উত্তরে চলছে। এখানে মূল বিষয় ‘জাহাজ’এইটি উদ্দেশ্য এবং ‘চলছে’ এই সমাপিকা ক্রিয়াটি বিধেয়। উদ্দেশ্যকে বাড়ানো যেত, ভারতীয় বা ইতালীয় শব্দ যোগ করে। বিধেয়কে বাড়ানো যেত ‘চিন পার হয়ে উত্তরে' ইত্যাদি যোগ করে।

প্রশ্নঃসরল বাক্য কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

যে বাক্যে একটিমাত্র উদ্দেশ্য এবং একটি মাত্র সমাপিকা ক্রিয়া থাকে তাকে বলে সরল বাক্য। যেমন— ‘হে বঙ্গ ভারতের তব বিবিধ রতন' এখানে সমাপিকা ক্রিয়া ‘আছে’উহ্য আছে। ‘ভান্ডারে তব’‘বিবিধ’ইত্যাদি বিধেয়ের বিশেষণ ।

প্রশ্নঃজটিল বাক্য কাকে বলে? উদাহরণ দাও ।

যে বাক্যে একটিমাত্র প্রধান বাক্য এবং সেই বাক্যের উপর নির্ভরশীল একটি বা একাধিক অপ্রধান বাক্য থাকে, তাকে জটিল


বাক্য বলে। যেমন-তেমন, যথা, তথা, যখন-তখন ইত্যাদি শব্দ দ্বারা জটিল বাক্যকে অন্বিত করা হয়। যেমন— যেহেতু তিনি সকলের শ্রদ্ধেয় ।

নত্ববিধান কী?

বাংলা বানানের কোথায় ‘ন’ কোথায় ‘ণ’ বসবে তার যে ব্যাকরণসম্মত নিয়ম আছে তাকে নত্ববিধান বলে। ষত্ববিধান কী?

বাংলা বানানের কোথায় ‘স’ কোথায় ‘শ’ বা কোথায় ‘ষ’ ব্যবহার হবে, তার ব্যাকরণসম্মত যে বিধি বা নিয়ম আছে যত্ববিধান বলে।

প্রশ্নঃ কোথায় নত্ব বা যত্ববিধান প্রযোজ্য নয়, উদাহরণ নয়।

বাংলা তদ্ভব, দেশি বা বিদেশি শব্দের ক্ষেত্রে এই নিয়মগুলি প্রযোজ্য নয়। কেবলমাত্র সংস্কৃত থেকে আগত তৎসম শব্দের ক্ষেত্রে নত্ববিধান ও ষত্ববিধান নিয়মগুলি প্রযোজ্য। যেমন-পেন (বিদেশি), শ্রীমান (তৎসম)।

প্রশ্ন : বাংলা বাক্যের তিনটি প্রধান বৈশিষ্ট্য কী কী ?

কয়েকটি বিভক্তিযুক্ত শব্দবন্ধ দ্বারা যখন একটি ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করা হয় তাকে বাক্য বলে। বাক্যের তিনটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল—আকাঙ্ক্ষা, যোগ্যতা ও আসক্তি, যাদের একত্রে বাক্যের ত্রিসূত্র বলে।

প্রশ্ন ঃবাক্যের প্রধান দুটি অংশ কী কী ?

বাক্যের প্রধান অংশ হল দুটি। যথা—উদ্দেশ্য ও বিধেয়- রাম/ভাত খায়—এখানে ‘রাম’ উদ্দেশ্য ও ‘ভাত’ বিধেয়। অর্থ অনুযায়ী বাক্য কয়প্রকার ও কী কী ?

অর্থ অনুযায়ী বাক্য সাত প্রকার। যথা-নির্দেশক বাক্য, প্রশ্নবোধক বাক্য, অনুজ্ঞাবাচক বাক্য, ইচ্ছাবাচক বাক্য, সন্দেহবাচক বাক্য, আবেগসূচক বাক্য ও শর্তসাপেক্ষ বাক্য।

শ্রেণিগতভাবে বাক্য কয়প্রকার ও কী কী?

শ্রেণিগতভাবে বাক্য সাধারণত তিনপ্রকার। যথা—সরল বাক্য, যৌগিক বাক্য ও জটিল বাক্য ।

বাংলা ভাষার লিখিত রূপ নিয়ে লেখ।

বাংলা ভাষার দুটি রূপ। কথ্যরূপ ও লেখ্যরূপ। লেখার ভাষাকে লেখ্য রূপ বলে। যেখানে থেকেই সাহিত্যিক ভাষার

সাধু ও চলিত ভাষায় সর্বনাম পদের ব্যবহার কেমন ?

সাধুভাষা—যাহা, তাহা যাহাকে ইহা তাহাকে ।

চলিত ভাষা—যা, তা, যাকে, এ, তাকে।

SECTION - A – মান – ১৫ পাঠ্যবই থেকে টেক্সট থেকে প্রশ্ন

SECTION - B – মান – ১৫ বোধ পরীক্ষণ

SECTION - C – মান – ১০ প্রবন্ধ রচনা

SECTION - D – মান – ১০ টেক্সট থেকে ব্যাকরণ





Post a Comment

0 Comments